সিউল, ২১ জানুয়ারি ২০১৪:
কর্মী সংকট দূরীকরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ বাড়াবে জাপান। এর ধারাবাহিকতায় কোম্পানিগুলো যাতে উচ্চপদস্থ ও প্রশিক্ষণার্থী পদে সহজে কর্মী নিয়োগ দিতে পারে এ লক্ষ্যে কাজ করছে দেশটির সরকার। গতকাল সোমবার দেশটির উপদেষ্টাপরিষদের এক সদস্য এ তথ্য জানান। খবর রয়টার্সের।
পুরো বিশ্বে অন্যান্য দেশের তুলনায় জাপানে বয়স্ক নাগরিকের সংখ্যা অনেক বেশি। দেশটির এক-চতুর্থাংশ মানুষের বয়স ৬৫ বছর পেরিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে দেশটির কর্মী বাহিনীর আকারও কমেছে, যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে প্রবৃদ্ধির ওপর। শ্রমিক ঘাটতি দূর, কর রাজস্ব বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বিদেশী ও নারী শ্রমিক বাড়ানোর নীতি নিয়েছে সরকার।
এর পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পদগুলোয় নারীকর্মী সংখ্যা বাড়াতে দেশটির সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে জানায় সূত্র। কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বাড়াতে শিশু পরিচর্যা ব্যবস্থাও জোরদার করা হবে। সেবিকা, শিশু পরিচর্যা ও অবকাঠামোর মতো খাতগুলোয় শ্রমিক ঘাটতি সবচেয়ে বেশি। কাজেই এসব খাতে ঘাটতি কমাতে কোম্পানিগুলো যাতে অধিক বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ দিতে পারে সে বিষয়ক নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া দেশটির সরকার করপোরেট করহার কমানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানানো হয়। জাপানের প্রতিষ্ঠানগুলোয় আরো বেশি প্রতিযোগিতা সক্ষম করতেই এ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানায় সূত্র। টোকিওভিত্তিক বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের আয়ের ওপর ৩৮ শতংশ করপোরেট কর দিতে হয়। বিশ্বের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে দায়িত্ব নিয়ে প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্তর বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এর মধ্যে কর কাঠামো পরিবর্তন, মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানো ও বিনিময় হার হ্রাস অন্যতম। প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে অর্থনৈতিক সংস্কারেও কিছু পদক্ষেপ নেন তিনি। এর মধ্যে বাজেট ঘাটতি ও সরকারি ঋণ কমানোর লক্ষ্যে বিক্রয় কর বাড়ানো অন্যতম। এপ্রিল থেকে খুচরা বিক্রয়ের ওপর ৫ শতাংশের বদলে ৮ শতাংশ হারে কর আদায় করা হবে। এছাড়া ২০১৫ সালের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে অর্ধেকেরও বেশি পথ এগিয়ে গেছে দেশটি।
ব্যয় প্রণোদনা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক অব জাপান’-এর কোয়ানটেটিভ ইজিং সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছেন আবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধি উত্তরণে কাঠামোগত সংস্কার এবং বিনিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিতে হবে বলে মত দিয়েছেন অনেক অর্থনীতিবিদ। সূত্রঃ বণিকবার্তা।