রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির অফিসের সামনে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে দোষারোপ করেছেন তিনি।
বুধবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নয়াপল্টনে হেলমেট পরা কিছু মানুষ এসে গাড়ির ওপরে আক্রমণ শুরু করল। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, এই হেলমেট পরা লোকজন ছাত্রলীগের; অসমর্থিত খবরে আমরা এটা জানতে পেরেছি। আজকের এ হামলার সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত। পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিনা কারণে, বিনা উসকানিতে যখন নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণ মিছিল আসছিল, সেখানে পুলিশ ঢুকে গিয়ে হঠাৎ করে বাঁধা দিতে শুরু করে এবং এরপরেই টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়েছে, গুলি চালানো হয়েছে। বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তারপরে হঠাৎ করেই পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাল। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাল কারা?’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচনের কর্মসূচিকে বানচাল করা, নির্বাচনকে বানচাল করা। এই আক্রমণ শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ নয়, এটা গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ, এটা সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের ওপর আক্রমণ। তিনি বলেন, যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে, বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, যখন উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তখনই এই আক্রমণ। সেই আক্রমণটা সরাসরি সরকারের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে আসল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পুরোপুরি বিনা উসকানিতে মিছিলের মধ্যে ঢুকে পুলিশ হামলা করেছে। একইসঙ্গে শিশুদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলন বানচালকারী ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনী এসে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে এবং সেখানে আগুন দিয়েছে। আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মীর হেলমেট পরে আসার কথা নয়। আমাদের নেতাকর্মীরা দু’দিন যাবত উৎসাহ-উদ্দীপনার মাঝে ফরম নিতে এসেছেন। যেটা ছিল পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ। পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়ে আবার আগের মতো আমাদের সারাদেশের কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী কাজ শুরু করেছিলাম, সেটা যদি আমরা করতে না পারি এবং নির্বাচনে থাকতে না পারি, তাহলে সেজন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকার দায়ী থাকবে।’
তিনি বলেন, ঘটনার পর সরকারের একটি নির্দিষ্ট মহল অভিযোগ করল যে, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা অত্যন্ত সাজানো একটি পরিকল্পনা। সেই পরিকল্পনা হচ্ছে, এই সাজানো হামলা করে বিএনপিকে দায়ী করে আবার বিএনপির ওপর হামলা, নির্যাতন শুরু করা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আজকে সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এই প্লট তৈরি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।
সৌজন্যে- পার্সটুডে