সিউল, ১১ জুন ২০১৪:
ঘাম সাধারণত শরীরের একটি প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ঘাম শরীরকে ঠান্ডা করে। কোনো কারণে শরীরে তাপ বেড়ে গেলে (যেমন- গরম, ব্যায়াম করার সময়, জ্বর, অতিরিক্ত কায়িক শ্রম ইত্যাদি) আমাদের দেহ ঘামের মাধ্যমে অতিরিক্ত তাপ বের করে দিয়ে শরীরকে প্রয়োজন মতো ঠান্ডা করে, যেন সে তার অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যেতে পারে। ঘাম শরীরের বর্জ্য পদার্থ (waste products and toxins)ও চর্মস্থ ব্যাকটেরিয়া অপসারণ করে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। শরীরের শতকরা ৩০ ভাগ বর্জ্য ঘামের মধ্য দিয়ে নির্গত হয়। চামড়ায় দৈনন্দিন জমাকৃত ময়লা ঘামের সঙ্গে বিধৌত হয়। ফলে চর্মরন্ধ্র পরিষ্কার থাকে, চামড়া মসৃণ ও নরম হয়। চর্মসৌন্দর্যের একটি ভালো ব্যবস্থা হচ্ছে ঘাম ঝরানো। যদি তার সঙ্গে যুক্ত হয় নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া, তা হলে তো কথাই নেই। চামড়া সুন্দর রাখার একটি জাদু হচ্ছে পানি। ঘামের সময়ে শ্বাসপ্রশ্বাস বাড়ে, হৃৎপিন্ডের সঙ্কোচন বৃদ্ধি পায়, রক্ত চলাচল ত্বরান্বিত হয় ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
গরমে ঝরা ঘাম, শরীরে এক অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি করে, কাপড় ভিজে গিয়ে পোশাকের সৌন্দর্য হ্রাস পায়, অসাবধানতাবশত কাপড়ে দাগ লাগে বা তিলাও পড়তে পারে। অতিরিক্ত ঘামে শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয় এবং পিপাসা, ক্লান্তি ও মাথা ঘোরাসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তাই পিপাসার জন্য দেরি না করে গরমে বারবার পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি, শরবত ও ফলের রস পান করা দরকার। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া ও তার গাঢ় রঙ দেখেই আন্দাজ করা যায় পানিশূন্যতার জন্য শরীর কতটুকু কষে গেছে ও কতটা অতিরিক্ত পানি পান করা দরকার। ঘর্মাক্ত শরীরে বিশেষ করে বগল ও উরুসন্ধির প্রোটিনসমৃদ্ধ ঘন ঘামে ব্যাকটেরিয়ার প্রদাহ হলে শরীরে দুর্গন্ধ হতে পারে। তাই গরমে কায়িক শ্রম যথাসম্ভব কম করা উচিত। রোদে বের হলে ছাতা ব্যবহার করা উত্তম। শীতল পরিবেশে সময় কাটানো ও সাবানসহ ভালোভাবে নিয়মিত গোসল করা একান্ত দরকার। খেয়াল রাখতে হবে, চামড়ায় ময়লার প্রলেপ যেন ঘামাচিসহ অন্য কোনো সমস্যা তৈরি করতে না পারে।
শরীরের একমাত্র সর্ববৃহৎ অংশ হচ্ছে চামড়া। রেচনক্রিয়ায় (excretion) অংশগ্রহণ ও দেহকে সৌন্দর্য প্রদান ছাড়াও এটা বিভিন্নভাবে আমাদের উপকার করে। চর্মসৌন্দর্য একটা গর্ব। তাই সবার ঘাম সম্পর্কে সচেতন হওয়া ও চামড়ার যত্ন নেয়া উচিত।সূত্রঃ আলোকিত বাংলাদেশ।