Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

রাসুলুল্লাহ (স.)-এর ইফতার

2016_06_08_19_28_24_rPdFL0bI1uNypvfQ7bTC74r5Y3Nyzc_originalইফতার ইসলামের একটি ধর্মীয় পরিভাষা। আরবি ভাষাতে ইফতার বলতে নাস্তা করা , খাবার গ্রহণ করা, করা ইত্যাদিকে বোঝায়। ইসলামের ধর্মীয় পারিভাষায় রোজাদার ব্যক্তি ঠিক সূর্যাস্তের সময় রোজা ভঙ্গ করার জন্য যে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করে তাকে ইফতার বলা হয়। রোজা রাখা যেমন একটি ইবাদাত তেমনি ইফতার করাটাও ইবাদাত। ইসলাম মানুষের  জীবনের প্রত্যেকটি বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। মুমিন-মুসলমানের বৈশিষ্ট্য হলো তার জীবনের প্রত্যেকটি কাজ সে ইসলামী শরীয়তের বিধি-নিষেধ মান্য করে পালন করবে। তার একমাত্র লক্ষ্য হবে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর আদর্শে নিজের জীবনকে ফুটিয়ে তোলা। আর তাই সে তার  প্রত্যেকদিন জীবনের সব কাজে পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করবে। কারণ মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর অনুকরণে জীবন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে ,‘ হে নবী ! আপনি বলে দিন , যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও , তাহলে আমাকে অনুসরণ কর। যাতে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল অসীম দয়ালু। আপনি বলুন , তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করো। অতঃপর তারা যদি পশ্চাৎধাবন করে, তাহলে আল্লাহ কাফিরদের ভালোবাসেন না। ( সুরা আল ইমরান : ৩১ , ৩২ )।

রাসুলুল্লাহ (স.) যেভাবে ইফতার বরতেন : হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন , রাসুলুল্লাহ (স.) কয়েকটি কাঁচা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তিনি যদি কাচা খেজুর না পেতেন , তাহলে কয়েটি শুকনো খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন।  যদি শুকনো খেজুরও না থাকত , তাহলে তিনি কয়েক ঢোক পানি দিয়ে ইফতার করতেন। ( মুসনাদে আহমাদ : ১২৬৭৬ , সুনানে আবু দাউদ : ২৩৫৬ , সুনানে তিরমিজি : ৬৯৬ , মুসনাদে বাজ্জার : ৬৮৭৫ , সুনানে দারেমি : ২২৭৭ ) হজরত সালমান ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন ইফতার করে তার উচিত খেজুর দিয়ে ইফতার করা। তবে সে যদি খেজর না পায় তাহলে সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কারণ পানি পাক-পবিত্র। ( মুসনাদে ইবনে আবি শাইবা : ৮৪৭ , মুসনাদে আহমাদ : ১৬২২৫ , সহীহ ইবনে খুজাইমা : ২৭৮ , বায়হাকি শুআবুল ঈমান : ৩৬১৫ ) খেজুর দিয়ে ইফতার করার মধ্যে রয়েছে সমূহ কল্যাণ যা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। মানুষ সারা দিন না খেয়ে থাকার কারণে তার পাকস্থলি উত্তপ্ত হয়ে থাকে সাথে সাথে শারীরিক দিক দিয়ে সে বেশ দুর্বলও হয়ে পড়ে। তাই ইফতারিতে এমন খাবার গ্রহণ করাই উচিত এবং যুক্তি সঙ্গত যা সহজে হজম হয় এবং শরীরের শক্তিও বৃদ্ধি করে। এদিক থেকে খেজুরের চেয়ে উত্তম খাবার অন্য কিছুই হতে পার না।

chardike-ad

ভুরি ভোজন বাঞ্ছনীয় নয় : হাদিস অধ্যায়ন করলে জানা যায় , রাসুলুল্লাহ (স.) সামান্য খেজুর বা পানি দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ আদায় করতেন। সারদিন না খেয়ে থাকার পর অতি ভোজন শরীরের জন্য ক্ষতিকর অপর দিকে অতিরিক্ত খেতে গিয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করতে অনেক বিলম্ব হয়ে যায়। তা ছাড়া অতিরিক্ত খাওয়া শুধু ইফতারিতেই নয় স্বাভাবিক অবস্থাতেও মুমিনের জন্য খুবই বেমানান। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন , রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন : মুমিন এক নাড়িতে খায় আর কাফির খায় সাত নাড়িতে। ( সহিহ আল- বোখারি : ৫৩৯৬ , সহিহ মুসলিম : ২০৬০ , ইবনে মাজা : ৩২৫৬ , তিরমিজি ; ১৮১৮ , আস্-সুনানুল কুবরা : ৬৭৪১ , মুসনাদে আহমাদ : ৫৪৩৯ ) অতএব ইফতারিতে অধিক খেয়ে নিজের শরীর ও আমলের ক্ষতি না করে রাসুলের সুন্নাতের ওপর আমল করে সামান্য কিছু খাবার গ্রহণ করে রোজা ভঙ্গ করে , মাগরিবের নামাজ আদায় করে তারপর যথা নিয়মে খাদ্য গ্রহণ করাই উচিত ।