Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটে কর্মী হ্রাস করেছে যুক্তরাষ্ট্র

yemenইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা পরিকল্পনার সমন্বয়ের কাজে নিয়োজিত সদস্যদের প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এছাড়া এ পরিকল্পনায় সহযোগিতাকারী কর্মীদের সংখ্যাও হঠাত্ করে হ্রাস করেছে দেশটি। গতকাল মার্কিন সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। খবর রয়টার্স।

বাহরাইনে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট ইয়ান ম্যাককনাহে জানান, যৌথ সম্মিলিত পরিকল্পনা সেলে (জেসিপিসি) এখন পূর্ণকালীন কাজের জন্য নিয়োজিত মার্কিন সামরিক সদস্যের সংখ্যা পাঁচেরও কম। ইয়েমেন যুদ্ধে ব্যবহূত আরব জোটের জঙ্গিবিমানগুলোয় মধ্য আকাশে জ্বালানি সরবরাহ এবং সীমিত গোয়েন্দা তথ্য-বিনিময়সহ যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিষয় সমন্বয়ের লক্ষ্যে গত বছর জেসিপিসি গঠন করা হয়।

chardike-ad

ম্যাককনাহে বলেন, এ সেলের অংশ হিসেবে রিয়াদ ও অন্যান্য এলাকায় পূর্ণকালীন কাজের জন্য সর্বোচ্চ ৪৫ জন মার্কিন কর্মী নিয়োগ করা হলেও এবার সেখান থেকে কর্মী সংখ্যা হ্রাস করা হলো। এর আগে বছরের প্রথম দিকে ইয়েমেনে জোটের বিমান হামলার মাত্রা কমে আসার পর জুনে কিছু কর্মী প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র। জোটের বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের নজরদারিতে আসতে থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জুনে কর্মী সংখ্যা হ্রাসের মাধ্যমে জেসিপিসিতে নিজেদের সার্বক্ষণিক সম্পৃক্ততা কমাতে শুরু করে ওয়াশিংটন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোয় কর্মী হ্রাসের খবর প্রকাশ করার পর এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দেয় পেন্টাগন। জেসিপিসির কার্যক্রম ‘বহুলাংশে হ্রাস’ করা হয়েছে এবং বর্তমানে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সীমিত বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে পেন্টাগন। যদিও চলতি গ্রীষ্মে ইয়েমেনে সংঘর্ষের মাত্রা আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অ্যাডাম স্টাম্প বিবৃতিতে বলেন, লড়াইয়ের মাত্রা আবার বেড়ে যাওয়ার পর সৌদি আরবের প্রতি সহযোগিতার মাত্রাও বাড়ানো হয়েছিল, এখন এর মাত্রা পুনরায় হ্রাস করা হয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইয়েমেনে সামরিক হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র কর্মী সংখ্যা হ্রাস করেনি।

উল্লেখ্য, দেশটিতে ১৬ মাস ধরে চলা গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৫০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন, যার অর্ধেকের বেশি বেসামরিক নাগরিক। ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দুর রাব্বু মনসুর হাদিকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে গত বছরের মার্চ থেকে সেখানে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। দেশটির হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে মূলত গৃহযুদ্ধ চলছে। এছাড়া ওই অঞ্চলে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার বিরুদ্ধেও লড়াই চালাচ্ছে আরব জোট। এ যুদ্ধ ইয়েমেনকে বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর কাতারে এনে ফেলেছে। যুদ্ধ দেশটিকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত গৃহযুদ্ধে ইয়েমেনের অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

এদিকে এ লড়াই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পেন্টাগন। স্টাম্প বলেন, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ধরে রাখার জন্য সৌদিদের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে ঠিকই, সে সঙ্গে ইয়েমেনের লড়াই ও এর পরিণাম নিয়েও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, যুদ্ধে সহযোগিতা করা মানে এই নয়, আমরা আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারব না। তিনি আরো বলেন, সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে আলোচনায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা ন্যূনতম রাখার চাপ দেয়া হয়েছে।

এদিকে সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোটের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ আল-আসেরি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সদস্যদের সংখ্যা হ্রাস নিয়ে পরিষ্কার কিছু জানাননি। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক কৌশলগত। তাদের এ পদক্ষেপে সামরিক কৌশলের প্রতিফলন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের সরিয়ে নিলেও তা দুদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।