Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

২০১৬ তে দেশ হারালো যে গুণীজনদের

gunijon

বছর আসে চলে যায়। দিয়ে যায় সুখ-দুঃখের নতুন স্মৃতি। প্রতিবারের ন্যায় ২০১৬ সালটিও এর ব্যতিক্রম নয়। এ বছরও দেশের হয়ে যেমন কৃতিত্ব বয়ে এনেকে অনেকে। নতুন ইতিহাস আর রেকর্ড সৃষ্টি করে নাম লিখিয়েছেন শ্রেষ্ঠত্বের তালিকায়।

chardike-ad

অপদিকে দেশ  হারিয়েছে বেশ ক’জন কৃতিমান জাতীয় ব্যক্তিত্বকে। হারানোর তালিকায় কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আছেন। তালিকায় রয়েছেন- শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীরা।

 ২০১৬ -তে যাদের হারিয়ে নতুন স্মৃতি বহন করছে দেশ, এখানে তাদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হলো-

সৈয়দ শামসুল হক
ফুসফুসের জটিলতা নিয়ে চিকিৎসার জন্য গত এপ্রিলে যুক্তরজ্যে গেলে সৈয়দ শামসুল হকের ক‌্যান্সার ধরা পড়ে। লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালে কিছু দিন চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা আশা ছেড়ে দিলে জীবনের বাকি দিনগুলো দেশে কাটানোর জন্য ১ সেপ্টেম্বর ফিরে আসেন তিনি।

পরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ সেপ্টেম্বর বিকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সব‌্যসাচী লেখক সৈয়দ হক। বাংলা সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে সদর্প বিচরণকারী সৈয়দ হকের বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

পঞ্চাশের দশকে ‘একদা এক রাজ্যে’ কাব্য দিয়ে কবি হিসেবে শামসুল হকের যাত্রা শুরু হলেও তারও আগে ‘তাস’ নামে একটি ছোট গল্পের গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল তার।

এরপর অবিরাম লিখে গেছেন সৈয়দ হক। যদিও সব ছাপিয়ে কবি পরিচয়টিই প্রধান মনে করতেন তার সাহিত‌্যাঙ্গনের বন্ধুরা।

বৈশাখে রচিত পংক্তিমালা, পরাণের গহীন ভেতর, নাভিমূলে ভস্মাধার, আমার শহর ঢাকা, বেজান শহরের জন্য কেরাম, বৃষ্টি ও জলের কবিতা- এসব কাব‌্যগ্রন্থের অজস্র কবিতায় তার নানা নিরীক্ষা জনপ্রিয়তাও এনে দেয়।

কাব্যনাট্য রচনায় ঈর্ষণীয় সফলতা পাওয়া সৈয়দ হক নূরলদীনের সারাজীবন, পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, গণনায়ক, ঈর্ষা ইত্যাদি নাটকে রেখেছেন মুন্সীয়ানার স্বাক্ষর। ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ ও ‘নুরলদীনের সারাজীবন’ বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে আছে।

তিনি মহাকাব্যিক পটভূমিকায় বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ নামে দীর্ঘ উপন্যাস যেমন লিখেছেন, তেমনি ছোট আকারের উপন্যাস লিখেছেন সমান তালে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ তাৎপর্যময় হয়ে উঠেছে তার ‘নিষিদ্ধ লোবান’সহ নানা উপন‌্যাসে।

‘খেলারাম খেলে যা’, ‘নীল দংশন’, ‘মৃগয়া’, ‘সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘এক মহিলার ছবি’, ‘দেয়ালের দেশ’, ‘স্তব্ধতার অনুবাদ’, ‘এক যুবকের ছায়াপথ’, ‘মহাশূন্যে পরানমাস্টার’, ‘তুমি সেই তরবারী’, ‘দ্বিতীয় দিনের কাহিনী’, ‘অন্তর্গত’, ‘এক মুঠো জন্মভূমি’, ‘শঙ্খলাগা যুবতী ও চাঁদ’, ‘বাস্তবতার দাঁত ও করাত’, ‘বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ’

‘আয়না বিবির পালা’সহ ৫০টির বেশি উপন‌্যাস এসেছে তার হাত দিয়ে।

কবি শহীদ কাদরী
দীর্ঘ দিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শহীদ কাদরীর মৃত্যুর খবর আসে ২৮ অগাস্ট সন্ধ্যায়। নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

১৯৪২ সালের ১৪ অগাস্ট কলকাতায় জম্ম নেওয়া শহীদ কাদরী সাতচল্লিশে দেশভাগের পর বাংলাদেশে চলে আসেন। তবে ১৯৭৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশের বাইরে ছিলেন তিনি। জার্মানি, ইংল্যান্ড হয়ে ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হন।

তার ‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোন ক্রন্দন নেই’ ও ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ চারটি কাব্যগ্রন্থ তাকে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে। শহীদ কাদরী ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি এবং ২০১১ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।

কবি রফিক আজাদ
‘ভাত দে হারামজাদা- তা না হলে মানচিত্র খাব’ খ্যাত কবি রফিক আজাদ চলে গেলেন এ বছরের ১২ মার্চ। এর আগে দুই মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারজয়ী এই কবি। মৃত‌্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার গুণী গ্রামে কবির জন্ম। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর শেষে শুরু করেছিলেন শিক্ষকতা।

এরপর বাংলা একাডেমিতে যোগ দিয়ে একাডেমি প্রকাশিত পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’র নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে ১৯৭২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সাপ্তাহিক রোববার সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেন। কাজ করেছেন বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন, উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে।

কবিতা লেখার শুরুর অনেক পরে বেরিয়েছে রফিক আজাদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে আছে- ‘অসম্ভবের পায়ে (১৯৭৩); সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে (১৯৭৪); নির্বাচিত কবিতা (১৯৭৫); চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া (১৯৭৭)।

ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে তাকে একুশে পদক দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের পর সাহিত্য কর্মের জন্য আরও অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।

ডা. এম আর খান
দেশে শিশু চিকিৎসার পথিকৃৎ জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান মারা গেছেন ৫ নভেম্বর। চিকিৎসার পাশাপাশি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া প্রায় সব সম্পত্তিই নিজের জেলা সাতক্ষীরার মানুষের কল‌্যাণে দিয়ে গেছেন তিনি।

১৯২৮ সালের ১ অগাস্ট শহরতলীর রসুলপুর গ্রামে জন্ম মোহাম্মদ রফি খানের; পরে যিনি এম আর খান নামেই পরিচিত হন।

আব্দুল বারী খান ও জায়েরা খানমের চার ছেলের মধ্যে মেজ রফি সাতক্ষীরা সদরের প্রাণনাথ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় (পিএন স্কুল) থেকে ১৯৪৩ সালে প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন।

দুই বছর পর প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করে ভর্তি হন কলকাতা মেডিকেল কলেজে। সেখান থেকে ১৯৫২ সালে এমবিবিএস পাস করে ফিরে আসেন সাতক্ষীরায়।

দূর সম্পর্কের আত্মীয় আনোয়ারা বেগম আনুর সঙ্গে ১৯৫৪ সালের ১ জানুয়ারি এম আর খানের বিয়ে হয়। পরের বছর উচ্চ শিক্ষার জন্য সস্ত্রীক বিদেশে পাড়ি জমান তিনি।

সেখানে লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে এম আর খান ১৯৫৭ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার কেন্ট ও এডিনবরা গ্রুপ হাসপাতালে সহকারী রেজিস্ট্রার ও রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরে চলে আসেন দেশে। ফিরেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে যোগ দেন তিনি। ১৯৬৯ সালে সেখানে শিশু বিভাগে যোগ দিয়ে পরের বছর অধ্যাপক হন।

১৯৭১ সালে ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ-আইপিজিএমআরের (বর্তমানে বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক হন;  ১৯৭৩ সালে একই ইনস্টিটিউটের যুগ্ম-পরিচালকের দায়িত্ব পান।

ডা. খান ১৯৭৮ সালের নভেম্বরে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালকের পদে যোগ দেন। শিশুদের জন‌্য বিশেষায়িত এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায়ও তার ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। একই বছর আইপিজিএমআরের শিশু বিভাগেও যোগ দেন তিনি।

১৯৮৮ সালে অবসর নিলেও চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যান অধ্যাপক এম আর খান। তাকে জাতীয় অধ‌্যাপকে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।

এম আর খান শিশুরোগ চিকিৎসা ও সমাজ সেবার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।

নিউরোসার্জন রশিদ উদ্দিন
দেশের প্রথম নিউরোসার্জন রশিদ উদ্দিন আহমদ (৭৯) মারা যান ১৯ মার্চ।

একাত্তরে তিনিই ছিলেন দেশের একমাত্র নিউরোসার্জন। ড. রশিদের হাতেই বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন পিজি) নিউরোসার্জন বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়।

তার স্ত্রী ড. কামরুন নাহার এবং দুই সন্তান রয়েছে। তার মেয়ের নাম রাশিদা আহমদ ও ছেলে রেজা আহমদ।

এ বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ইমেরিটাস এ অধ্যাপকের ‘বড় ধরনের’ স্ট্রোক হয়। এরপর থেকে তিনি কোমাতেই ছিলেন।

কয়েক দশক ধরে রোগীদের আস্থার প্রতীকে পরিণত হওয়া অধ‌্যাপক রশিদ ১৯৭০ সাল থেকে নিউরো সার্জারির রোগী দেখা শুরু করেন।

নৃবিজ্ঞানী সামসুল আরেফিন
প্রখ‌্যাত নৃবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন খান সামসুল আরেফিন গত ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার লালমাটিয়ায় নিজের বাসায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।

তার দুই ভাই বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যায়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ‌্যাপক এবং মহীউদ্দীন খান আলমগীর আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার বড় বোন নীলুফার বেগম বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব ছিলেন।

বুয়েট উপাচার্য খালেদা একরাম
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রথম নারী উপাচার্য অধ্যাপক খালেদা একরাম মারা যান ২৪ মে। স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক খালেদা একরামকে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বুয়েটের উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

১৯৫০ সালের ৬ অগাস্ট ঢাকায় জন্ম নেওয়া খালেদা একরামের বাবার বাড়ি বগুড়ায়। ১৯৭৪ সালে বুয়েট থেকে স্থাপত্যে ডিগ্রি নেওয়ার পর সেখানেই শিক্ষকতা শুরু করেন।

১৯৮০ সালে ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াই থেকে নগর পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি। পরে ১৯৯২ সালে সুইডেনে স্থাপত্য ও উন্নয়ন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেন।

অধ্যাপক খালেদা একরাম ছিলেন বাংলাদেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পাওয়া দ্বিতীয় নারী উপাচার্য। আর বুয়েটে প্রথম।

এনামুল হক মোস্তফা শহীদ
সাবেক সমাজকল‌্যাণমন্ত্রী, হবিগঞ্জের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক মোস্তফা শহীদ মারা যান ২৫ ফেব্রুয়ারি।

১৯৩৮ সালের ২৮ মার্চ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নের কুটিরগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা আব্দুল হক পেশায় চিকিৎসক ছিলেন।

বাহান্নোর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছেষট্টির ৬ দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তার অসামান্য অবদান ছিল।

হবিগঞ্জ ভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক মুক্তিযুদ্ধের সময় হবিগঞ্জ মহকুমা সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের নির্বাহী সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে এবং ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-চুনারুঘাট আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারে সমাজকল‌্যাণমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পান তিনি। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৩ সালে একুশে পদকপ্রাপ্ত এনামুল হক স্ত্রী মিনু মমতাজ ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।

প্রমোদ মানকিন
আওয়ামী লীগ নেতা সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন ৭৭ বছর বয়সে মারা যান এ বছরের ১১ মে। আড়াই দশকের বেশি সময় রাজনীতিতে সক্রিয় প্রমোদ মানকিন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন।

গারো ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয়ভিত্তিক সামাজিক সংস্থা-ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক তিনি।

প্রমোদ মানকিনের জন্ম ১৯৩৯ সালের ১৮ এপ্রিল নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বাকালজোড়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে এক গারো পরিবারে। তার বাবা প্রয়াত মেঘা তজু এবং মা হৃদয় শিসিলিয়া মানকিন। আট ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম।

১৯৬৩ সালে নটরডেম কলেজ থেকে বিএ পাস করার পর ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজে বিএড করা প্রমোদের কর্মজীবনের শুরু স্কুল শিক্ষক হিসেবে। ১৯৮২ সালে তিনি আইনের ডিগ্রি নিয়ে ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন।

ছাত্রজীবন থেকেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন প্রমোদ মানকিন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন তিনি। মেঘালয় শিববাড়ি শরণার্থী শিবিরে ৫০ হাজার বাংলাদেশির দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল তার।

শিক্ষকতা থেকে আইনজীবী এবং তারপর এনজিওতে কাজ করেন প্রমোদ মানকিন। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন তিনি। প্রমোদ মানকিন জাতীয় সংসদে ময়মনিসংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন চার বার। ১৯৯১ সালে রাজনীতিতে এসেই সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। পরে ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদে আসেন।

ধর্মীয় ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনে সম্পৃক্ততার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন প্রমোদ মানকিন। ১৯৬৪ সালে গারো নেতা জোয়াকিম আশাক্রার মেয়ে মমতা আরেংয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে তাদের।

বঙ্গবন্ধু হত‌্যা মামলার বাদী মুহিতুল
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী আ ফ ম মুহিতুল ইসলাম ৬৩ বছর বয়সে মারা যান ২৫ অগাস্ট।

রাষ্ট্রপতি থাকার সময় বঙ্গবন্ধুর রিসিপশনিস্ট কাম রেসিডেন্ট পিএ ছিলেন মুহিতুল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত‌্যাকাণ্ডের সময় তিনি ধানমণ্ডির ওই বাড়িতেই ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত‌্যাকাণ্ডের বিচারের বাধা কেটে যাওয়ার পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ওই হত‌্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মামলা করেন মুহিতুল। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বিচারিক আদালত ওই মামলার রায়ে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে হাই কোর্ট প্রথমে বিভক্ত রায় দিলে পরে তৃতীয় বেঞ্চে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।

২০০৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। বিচার প্রক্রিয়া শেষে ছয় আসামির মৃত‌্যুদণ্ড ইতোমধ‌্যে কার্যকর হয়েছে। তবে দণ্ডিত বেশ কয়েকজন এখনও পলাতক।

বেগম সম্পাদক নূরজাহান বেগম
উপমহাদেশে নারীদের প্রথম সাপ্তাহিক বেগম’র সম্পাদক নূরজাহান বেগম মারা যান ২৩ মে।

বাংলাদেশে নারী সম্পাদকদের পথিকৃৎ নূরজাহানের জন্ম ১৯২৫ সালের ৪ জুন চাঁদপুরের চালিতাতলী গ্রামে। ১৯৪২ সালে পশ্চিমবঙ্গের ভাগলপুরে বেগম রোকেয়া প্রতিষ্ঠিত সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল থেকে মেট্রিক পাসের পর কলকাতার লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষা নেন তিনি।

সাহিত্য চর্চায় মেয়েদের জায়গা করে দিতে তার বাবা সওগাত পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন ১৯৪৭ সালে ‘বেগম’ পত্রিকা চালু করেন। প্রথমে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হলেও দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে পত্রিকাটি ঢাকায় চলে আসে। প্রথম চার মাস পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন কবি সুফিয়া কামাল। এরপর সম্পাদনার দায়িত্বে আসেন নূরজাহান বেগম।

বাংলাদেশের নারী সাহিত্যিকদের অনেকের লেখার হাতেখড়ি বেগম পত্রিকার মাধ্যমে।

নারীদের লেখালেখিতে উৎসাহিত করা নূরজাহান বেগম এক সাক্ষাৎকারে বলেন- “বেগমের বাইরে আমি কোনো দিনই কোনো কিছু করার চেষ্টা করিনি। বেগমই তো আমার সারা জীবনের কাজ।”

নারী শিক্ষা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে তাকে রোকেয়া পদকে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, লেখিকা সংঘ, কাজী জেবুন্নেসা-মাহবুবউল্লাহ ট্রাস্ট, রোটারি ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন তাকে সম্মাননা জানিয়েছে।

১৯৫২ সালে কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলার প্রতিষ্ঠাতা রোকনুজ্জামান খানের (দাদা ভাই) সঙ্গে বিয়ে হয় নূরজাহান বেগমের। ১৯৯৯ সালে তার স্বামীর মৃত্যু হয়।

অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা
দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভোগার পর ৮১ বছর বয়সে গত ১৩ জুন মারা যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা।

১৯৩৫ সালে জন্ম নেওয়া মনিরুজ্জামান মিঞা লেখাপড়া করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে মাস্টার্স করার পর জগন্নাথ কলেজে তার শিক্ষকতার শুরু।

এইচ এম এরশাদ সরকারের শেষ বছর ১৯৯০ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয় অধ্যাপক মনিরুজ্জামানকে। ১৯৯২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে মনিরুজ্জামান মিঞাকে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়।

বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সময় পুনর্গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনারও ছিলেন এই অধ্যাপক।

বিএনপি নেতা হান্নান শাহ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আ স ম হান্নান শাহ সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর মারা যান।

সেনাবাহিনীর সাবেক এ কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে অবসরে যাওয়ার পর বিএনপিতে সক্রিয় হন। ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন তিনি।

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল সেনা সদস্যের হাতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে রাঙ্গুনিয়া থেকে তার মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসেন তখনকার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহ।

অবসরের পর এরশাদের সময়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৩ সালে ওই পদ ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন।

শুরুতে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) এবং ১৯৯৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস‌্য ছিলেন তিনি।

হান্নান শাহ ১৯৯১ সালের নির্বাচনে গাজীপুর-৪ আসন (কাপাসিয়া) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তাকে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ২০০১ সালের নির্বাচনে জিতে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় গেলেও সেবার হেরে যান হান্নান শাহ। ২০০৭ সালের শুরুতে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই বছরের জরুরি অবস্থার মধ‌্যে খালেদা জিয়া যখন কারাগারে, সে সময় বিএনপিকে সংগঠিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন হান্নান শাহ। দলের সংস্কারপন্থি অংশের বিরুদ্ধে সে সময় গণমাধ্যমেও সোচ্চার ছিলেন তিনি।

এরপর ২০০৯ সালে বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে দলের সবোর্চ্চ ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হয় হান্নান শাহকে, এ বছর অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কাউন্সিলেও তা বহাল থাকে।

নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় কয়েকবার কারাগারে যেতে হয়েছিল আ স ম হান্নান শাহকে। বর্তমান সরকারের সময়েও তাকে কারাগারে যেতে হয়, নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৩০টির বেশি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।

বিএনপি নেতা আর এ গনি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি মারা গেছেন ১৫ জানুয়ারি। জিয়াউর রহমানের সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা গনির বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।

প্রকৌশলী গনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে ছিলেন।

পারভিন সুলতানা দিতি
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ক্যান্সারের কাছে হার মানেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পারভিন সুলতানা দিতি। ৫০ বছর বয়সে গত ২০ মার্চ মারা যান তিনি।

১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের মধ‌্য দিয়ে ঢাকার চলচ্চিত্রে পা রাখা দিতি পরবর্তী এক দশক অভিনেত্রী হিসেবে ঢালিউড শাসন করেন। ১৯৮৭ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘স্বামী-স্ত্রী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।

দিতি অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘আমিই ওস্তাদ’, ‘দুই জীবন’, ‘উছিলা’, ‘লেডি ইন্সপেক্টর’, ‘খুনের বদলা’, দয়ামায়া’, ‘আত্মবিশ্বাস’, ‘ভাইবন্ধু’ ‘আজকের হাঙ্গামা’, ‘প্রেমের প্রতিদান’, ‘শেষ উপহার’, ‘অপরাধী’, ‘কালিয়া’, ‘কাল সকালে’ ইত্যাদি। তার মুক্তি পাওয়া সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘সুইট হার্ট’।

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি টিভি নাটকেও জনপ্রিয় মুখ ছিলেন দিতি। উপস্থাপনা করতেন রান্না বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানও।

চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকন
বাংলাদেশে অ্যাকশনধর্মী সিনেমা বানিয়ে খ্যাতি পাওয়া চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকন ৫৯ বছর বয়সে মারা যান ৪ এপ্রিল।

তার চলচ্চিত্রে মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর, অপরাধীর বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিকের লড়াই এসেছে বার বার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাও তার চলচ্চিত্রকে ছুঁয়ে গেছে।

শহীদুল ইসলাম খোকনের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১৫ মে। অভিনেতা ও প্রযোজক সোহেল রানার সঙ্গে পরিচয় ও সখ‌্যের সূত্রে তারই সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন।

খোকনের নিজের বানানো প্রথম সিনেমা ছিল ‘রক্তের বন্দি’। শুরুর দিকে খোকনের ছবি ভালো ব্যবসা করতে না পারলেও চিত্রনায়ক রুবেলকে নিয়ে তার ‘লড়াকু’ বক্স অফিসে দারুণ সাফল্য পায়।

এরপর ‘পালাবি কোথায়’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘ভণ্ড’, ‘ঘাতক’, ‘বীরপুরুষ’, ‘লাল সবুজ’, ‘বজ্রমুষ্ঠি’, ‘সতর্ক শয়তান’, ‘বিষদাঁত’, ‘উত্থান পতন’ ও ‘টপ রংবাজ’-এর মতো বহু দর্শকপ্রিয় সিনেমা এসেছে তার হাত দিয়ে। নির্মাণ করেছেন প্রায় ৪০টির মতো সিনেমা। গুণী এ নির্মাতা অভিনয়ও করেছেন দুটি চলচ্চিত্রে।

ফরিদ আলী ওরফে ‘চাল্লি ফরু’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় অভিনেতাদের একজন মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ আলী ওরফে ‘চাল্লি ফরু’ ২২ অগাস্ট মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

বিটিভির প্রথম নাটক ‘একতলা দোতলার’ অভিনেতা ফরিদ আলী সত্তর ও আশির দশকের নাটকে কৌতূক অভিনয়ে জয় করে নেন দর্শক মন।

১৯৬২ সালে ‘কনে দেখা’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন ফরিদ আলী। চার বছর পর আমজাদ হোসেনের ‘ধারাপাত’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড়পর্দায় কাজ করতে শুরু করেন তিনি। এরপর অভিনয় করেছেন ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘স্লোগান’, ‘চান্দা’, ‘দাগ’, ‘অধিকার’সহ বহু সিনেমায়।

শুধু অভিনয় নয়, নাটক লেখা ও নির্দেশনায়ও সিদ্ধহস্ত ছিলেন এই শিল্পী। তার লেখা প্রথম টিভি নাটক ‘নবজন্ম’। নতুন বার্তা।