প্রবাসীদের পাঠানো টাকায় দেশের রিজার্ভ বাড়লেও তাদের অপমান করা হচ্ছে এবং এয়ারপোর্টে ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে এজন্য ক্ষমা চেয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সম্প্রতি লন্ডনের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ তার এ অবস্থান প্রকাশ করেন।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস একসময় ইতালিসহ ইউরোপে তাণ্ডব চালাতে থাকলে তখন অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে আসেন। করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সেই প্রবাসীদের আশকোনায় হজক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোকে কেন্দ্র করে হট্টগোল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রবাসীরা অভিযোগ করেন, সুষ্ঠু কোনো ব্যবস্থাপনা ছাড়া তাদের ভোগান্তির মধ্যে ফেলা হয়েছে। তবে সেসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবজাদা হয়ে যান।’
লন্ডনভিত্তিক চ্যানেল আইঅনটিভির লাইভ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি। এরমধ্যে ২০ লাখ আছেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক ও ব্যবসায়ী। আর বাকি ৮০ লাখ সাধারণ গায়ে খাটা মানুষ। এই প্রবাসীরা প্রতি বছর ২০ বিলিয়ন ডলার পাঠান, যা দিয়ে আমাদের দেশের বড় বড় মেগা প্রজেক্টসহ আরও অনেক কিছু হয়ে থাকে। জানুয়ারি ২০১৯ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯ মাসে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর আমরা তাদের অপমান করছি। এয়ারপোর্টে ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এজন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি। এটা আমাদের ব্যর্থতা, ন্যক্কারজনক, লজ্জাজনক।
‘সরকারের কাছে অনুরোধ, প্রায় একশ দেশে প্রবাসী থাকেন, এর মধ্যে আশি দেশে প্রবাসীদের বেশি অবস্থান। তাদের এক বিলিয়ন ডলার ফেরত দিয়ে এই মুহূর্তে সহযোগিতা করুন। তারা যেন খাদ্যে ও চিকিৎসাসেবায় কষ্ট না পান। আদি যুগের নিয়ম পরিহার করা দরকার। তাদের প্রেরিত টাকায় দেশে রিজার্ভ হয়ে থাকে।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, দেশ বাঁচাতে হলে মানুষকে বাঁচাতে হবে। আমরা সামাজিক দূরত্বের কথা বলছি। সামাজিক বৈষম্য যদি না কমাতে পারি। তাহলে আমাদের সমূহ বিপদ। আমরা এ থেকে উদ্ধার পেতে পারি সকলে মিলে কাজ করে। সেজন্য সরকারকে উদার হতে হবে। তাদের বাস্তববাদী হতে হবে এবং সকল রাজনীতিবিদকে নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করতে হবে। সরকার যদি কৃষির ওপর নজর না দেয়, তবে আমাদের দেশে দুর্ভিক্ষ আসবে, অনাহার আসবে। তাই আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।



































