
নেপালে সামাজিকমাধ্যম নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩৪৭ জন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর কাঠমান্ডু পোস্ট।
সোমবার সকালে কাঠমান্ডুর বাণেশ্বর এলাকায় প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয় দেশটির জেন-জি প্রজন্ম। অল্প সময়ের মধ্যে তা রাজধানীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। পরে পোখারা, বুতোয়াল, ভারতপুর ও ইতাহারিসহ বিভিন্ন শহরে ছাত্র–জনতা রাস্তায় নামে।
বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে নেপাল সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। এ ছাড়া টিয়ার শেল, জলকামান ও রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরা লাঠি, গাছের ডাল ও পানির বোতল নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়। কয়েকজন সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টাও করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঠমান্ডুর একটি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। পরে তা পুরো রাজধানী ও আশপাশের জেলায় বিস্তৃত হয়। যেসব এলাকায় ছাত্র–জনতার জমায়েত বেশি ছিল, সেখানে বাড়ানো হয়েছে সেনা–পুলিশের টহল।
বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন শীতল নিবাস, ভাইস প্রেসিডেন্টের বাসভবন, রাজপ্রাসাদ সিংহ দরবার এবং প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ও আশপাশে।
নেপাল সরকার জানিয়েছে, ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স, লিংকডইনসহ মোট ২৬টি প্ল্যাটফর্ম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন নেয়নি। এ কারণে এগুলোতে প্রবেশাধিকার বন্ধ করা হয়েছে। সরকারের দাবি, বিদ্বেষ ছড়ানো, গুজব এবং সাইবার অপরাধ ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কয়েক লাখ নেপালি এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন বিনোদন, খবর ও ব্যবসার জন্য। ২৫ বছর বয়সী জেনিশা জোশি ফেসবুকের মাধ্যমে গয়না বিক্রি করেন। তিনি বলেন, “ফেসবুক বন্ধ হলে আমার ব্যবসায় ধস নামবে। দেশের বাইরে থাকা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।”
দেশটির বিরোধী নেতা সুমনা শ্রীষ্টা অভিযোগ করেন, সরকার স্বাধীন মতপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস–এর আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ইয়ি বলেন, নেপালের এই পদক্ষেপ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য বিপদজনক নজির হয়ে থাকবে।






































