
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু সংসদে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারালেন। দেশের ঋণ কমাতে প্রায় ৫২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় কমানোর প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হওয়া সংকটেই ভেঙে পড়ল তার সরকার।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় পরিষদে অনুষ্ঠিত ভোটে ৫৭৭ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ৩৬৪ জন বাইরুর বিপক্ষে ভোট দেন। সমর্থন পান মাত্র ১৯৪ জনের। ফলে মাত্র নয় মাসের মাথায় বিদায় নিতে হচ্ছে তাকে।
বাইরুর কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করবেন। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর দপ্তর জানিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হবে।
ঋণ জিডিপির ১১৪ শতাংশে পৌঁছে যাওয়ায় তা কমাতে বাইরু কড়াকড়ি বাজেট পেশ করেছিলেন। তিনি নিজেই বলেছিলেন, বাজেট পাস না হলে সরকার টিকে থাকবে না। শেষ পর্যন্ত সেই বাজেটই তার পতনের কারণ হলো।
ভোটের আগে বাইরু সতর্ক করে বলেন, “আপনারা সরকার ভেঙে দিতে পারেন, কিন্তু বাস্তবতা বদলাতে পারবেন না। খরচ বাড়তেই থাকবে, আর ঋণের বোঝা আরও ভারী হয়ে উঠবে।” কিন্তু তার আবেদন সংসদে গৃহীত হয়নি।
এখন পর্যন্ত ম্যাক্রোঁর সময়ে এটি ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন। মাত্র দুই বছরে পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী খুঁজতে হচ্ছে তাকে। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে ব্যস্ত সময়ের মধ্যেই নতুন অভ্যন্তরীণ সংকটে পড়লেন প্রেসিডেন্ট।
বিরোধী দলগুলোও সুযোগ নিতে শুরু করেছে। বামপন্থী নেতা জ্যাঁ লুক মেলানশোঁ বলেছেন, “এখন জনগণের সামনে ম্যাক্রোঁ একা। তাকেও যেতে হবে।” অপরদিকে দক্ষিণপন্থী নেত্রী মারিন লো পেন বলেন, “এই সরকারের যন্ত্রণার শেষ হলো। এখনই আগাম নির্বাচনের ডাক দিতে হবে।”
নতুন সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে বাজেট পাস করা। তবে ভাঙা সংসদে সেই কাজ সহজ হবে না—যা শেষ পর্যন্ত বাইরুর পতনের কারণ হয়েছিল।
এদিকে ম্যাক্রোঁর পদত্যাগের দাবিও জোরালো হচ্ছে। তবে তিনি আগাম নির্বাচন বা সংসদ ভেঙে দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে নতুন রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।






































