গত বছর মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনসের (আইবিএম) করা পেটেন্টের সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৫৩৪টি। এতে গত বছরের পেটেন্টধারী প্রতিষ্ঠানের তালিকার শীর্ষে উঠে আসে আইবিএমের নাম। এ নিয়ে টানা ২২তম বছরের মতো তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। বৈশ্বিক পেটেন্ট-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহকারী সংস্থা আইএফআই ক্লেইমসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। খবর এনডিটিভি।
প্রযুক্তি বাজারে আধিপত্য বিস্তারের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে পেটেন্ট। এ কারণে প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট প্রায় প্রতিটি কোম্পানি নিজেদের পেটেন্টের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে। পেটেন্ট নিয়ে অ্যাপল, স্যামসাংয়ের মতো শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও দীর্ঘ সময় ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। দীর্ঘ সময় ধরে এ প্রতিযোগিতায় আইবিএম শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও পরের অবস্থানগুলো নিয়ে প্রতিযোগিতা সব সময়ই চাঙ্গা থাকে। এ তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কোরীয় প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি মোট ৪ হাজার ৯৫২টি পেটেন্ট করে। ৪ হাজার ৫৫টি নতুন পেটেন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ক্যানন। সনি ও মাইক্রোসফট এ সময়ে ৩ হাজার ২২৪ ও ২ হাজার ৮২৯টি পেটেন্ট করতে সক্ষম হয়। ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে তোশিবা।
গত বছর কোম্পানিটি মোট ২ হাজার ৬০৮টি নতুন পেটেন্ট করে। শীর্ষ দশে আরো রয়েছে কোয়ালকম, গুগল, এলজি ও প্যানাসনিক। উল্লেখ্য, এবারই প্রথম গুগল এ তালিকার শীর্ষ দশে উঠে এসেছে। গত বছর শীর্ষ সার্চ ইঞ্জিনটি করে মোট ২ হাজার ৫৬৬টি নতুন পেটেন্ট। আইএফআই ক্লেইমস তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানায়, এবারই প্রথম আইবিএম এক বছরে সাত হাজারের বেশি পেটেন্ট করার মাইলফলক স্পর্শ করেছে। প্রতিদিন গড়ে প্রতিষ্ঠানটি ২০টি পেটেন্ট করে।
প্রযুক্তি বাজারে মোবাইল ডিভাইস, পরিধেয় প্রযুক্তি পণ্য, ইন্টারনেট অব থিংসসহ বেশকিছু সেবা খাত সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেশ প্রসারিত হয়েছে। আর এসব বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে হলে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। এ কারণে আইবিএমের পাশাপাশি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। এ বিষয়ে আইবিএমের চেয়ারম্যান গিনি রোমেত্তি বলেন, ‘গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি আমাদের উন্নয়নের মূলমন্ত্র। ক্লাউড, বিগ ডাটা, নিরাপত্তা, সোস্যাল ও মোবাইল খাতে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগই আমাদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাহায্য করছে। গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নিত্যনতুন সেবা সরবরাহের ক্ষেত্রে এ খাতে বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই।’ প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রায় সাড়ে সাত হাজার পেটেন্টের মধ্যে আইবিএমের তিন হাজার পেটেন্ট ছিল অ্যানালিটিকস, ক্লাউড কম্পিউটিং, মোবাইল, সোস্যাল ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত।
গত পাঁচ বছরে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিটি তাদের বার্ষিক পেটেন্ট সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান সাইবার হামলা সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্লেষকদের চিন্তা করতে বাধ্য করছে। এ কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। এজন্য গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ ভিন্ন অন্য কোনো উপায় নেই বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বণিকবার্তা।



































