বাংলাদেশে চলমান রোহিঙ্গা সংকটে পাশে থাকার আশ্বাস জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা এক চিঠিতে তিনি এ আশ্বাস দেন।
এ সময় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব এবং সেই সঙ্গে রাখাইনে ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগের বিষয়টিও স্বীকার করেন তিনি।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণের একটি চিঠি গ্রহণ করেন মহাসচিব।
এবার প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে লেখা চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং আপনার নেতৃত্বে রূপান্তরপ্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলের ওপর রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব, সেই সঙ্গে রাখাইনে ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার উদ্বেগের কথা আমিও স্বীকার করি। রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা প্রদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংগঠিত করবে। মিয়ানমারের সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে আঞ্চলিক পক্ষ, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতিগোষ্ঠীর সংগঠন (আসিয়ান) এবং অন্য অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য আমার সহযোগিতা অব্যাহত রাখব। এর মধ্যে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরির বিষয়টিও থাকবে।’
মহাসচিব বলেন, ‘রাখাইনের জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সাহায্য এবং জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে আমরা কীভাবে সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে পারি, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আমি আমার ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপকদের অনুরোধ করেছি। জাতিসংঘ জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী এবং মিয়ানমারের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীর মাধ্যমে এই বিষয়ে সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিকার দেবে, যাতে রাখাইন ও সমগ্র মিয়ানমারে বিপদগ্রস্ত ও অভাবী ব্যক্তিদের কাছে নিরাপদ, দ্রুত, টেকসই এবং বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়।’
মহাসচিব বলেন, ‘আমি আশা করি যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ে হতে যাওয়া সম্মেলনটি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং রোহিঙ্গা ও সংখ্যালঘুদের জন্য সমাধান ও অবদান রাখার একটি সুযোগ হবে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে পরামর্শের পর সম্মেলনের ফলাফল ও পরিকল্পনাগুলোর জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। যাতে জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় কীভাবে প্রক্রিয়াটি সর্বোত্তমভাবে সমর্থন করতে হবে, তা বোঝা যায়।’
এ সময় আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ রমজান মাসে চার দিনের জন্য বাংলাদেশ সফরের সময় দুজনের আলোচনা আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বলেও জানান জাতিসংঘের এই প্রধান।