সম্মিলিত ভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করতে রাজি ইরান। তবে তারা শর্ত দিয়েছে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কনসোর্টিয়াম বা জোটের ভিত্তি অবশ্যই ইরানে হতে হবে।
ইরানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত শনিবার হোয়াইট হাউজের দূত স্টিভ উইটকফ ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অনুমতি দিয়েছে। তবে কোথায় সমৃদ্ধ করা হবে তা নিশ্চিত করা হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান, ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হবে না। অপর দিকে তেহরান জোরালো দাবি জানিয়েছে, ইরানের মাটিতে সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত থাকবে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে এই দুই অবস্থানের মাঝে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।
ওই জ্যেষ্ঠ ইরানি কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেন, ‘যদি কনসোর্টিয়াম ইরানের ভূখণ্ডে পরিচালিত হয়, তবে তা বিবেচনার যোগ্য হতে পারে। কিন্তু যদি এটি দেশের বাইরের কোথাও হয়, তাহলে সেটি নিশ্চিতভাবেই ব্যর্থ হবে।’
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে কোথায় এই কনসোর্টিয়ামের ভিত্তি স্থাপন করা হবে, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।
তবে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এই কনসোর্টিয়াম যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং এমনকি তুরস্কেও হতে পারে।
এটি বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য জ্বালানি সরবরাহ করবে এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তদারকির আওতায় থাকবে।
তবে উভয়ের পক্ষে গ্রহণযোগ্য শর্তে পৌঁছানোই বড় চ্যালেঞ্জ, সেইসঙ্গে এমন একটি কনসোর্টিয়াম বাস্তবে প্রতিষ্ঠা করাও সহজ হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুযায়ী, চুক্তির মূল বিষয় হবে একটি আঞ্চলিক সমৃদ্ধকরণ কনসোর্টিয়াম প্রতিষ্ঠা করা। তার শর্তগুলো হলো—ইরান ঘরোয়া প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত সমৃদ্ধকরণ প্রযুক্তি উন্নয়ন করতে পারবে না; চুক্তি সইয়ের পর ইরানকে সাময়িকভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৩ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে; ইরানের ভূগর্ভস্থ সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অকার্যকর করতে হবে; ইরানের ভূ-উপরিস্থ স্থাপনাগুলোর কার্যক্রম শুধু পারমাণবিক চুল্লির জ্বালানির মতো নিম্নমাত্রার সমৃদ্ধকরণে সীমিত থাকবে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র এখনও ইরানের আনুষ্ঠানিক জবাবের অপেক্ষায় আছে।
ইতোমধ্যে ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রস্তাব অনুযায়ী কখন ও কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে, সে বিষয়ে তারা আরও স্পষ্ট বক্তব্য চান।
সূত্র জানিয়েছে, হোয়াইট হাউজের দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির মধ্যে ষষ্ঠ দফার আলোচনাটি এই সপ্তাহান্তে মধ্যপ্রাচ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।