Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

‘মুজিব হত্যার কষ্ট এ উপমহাদেশ চিরদিন বয়ে বেড়াবে’

বিশিষ্ট ভারতীয় সাংবাদিক হিরণ্ময় কালেতকার বলেছেন, শেখ মুজিবকে হত্যার কষ্ট উপমহাদেশের মানুষ চিরকাল বয়ে বেড়াবে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার নয়াদিল্লীস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

mujib_and_indira_at_dhaka
০৭ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২। ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করছেন শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধী। ছবিঃ সংগ্রহ।

হিরণ্ময় বলেন, “১৫ আগস্ট এই মহাদেশের মানুষের জন্য আনন্দের দিন। অন্যদিকে সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিনও বটে। এদিন ভারত স্বাধীন হয়েছিন। এটা উপমহাদেশের জন্য আনন্দদায়ক সংবাদ। অন্যদিকে ১৫ আগস্ট এই উপমহাদেশের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় নেতা শেখ মুজিবকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এই কষ্ট এই অঞ্চলের মানুষ চিরদিন বয়ে বেড়াবে।”

chardike-ad

তিনি বলেন, “শেখ মুজিব ভাষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষকে একটা পরিচিত দিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, একজন মহান নেতা এবং মানবতাবাদী হিসেবে শেখ মুজিব চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক এ করিম, ভারতের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ড. শ্রী রাজামোহন, সাংবাদিক হিরন্ময় কালেতকার ও আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের পরিচালক কমিতা শর্মা।

ড. রাজামোহন পাকিস্তানের উদাহরণ টেনে বলেন, “ধর্মের ভিত্তিতে গঠিত রাষ্ট্র কোনদিন সামনে এগুতে পারে না। শেখ মুজিব শুধু ধর্মকে প্রাধান্য না দিয়ে ভাষা ও সংস্কৃৃতিতে প্রাধান্য দিয়ে একটি জাতির উত্থান ঘটিয়েছেন। এজন্য প্রয়োজন ছিল রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর সাহস।”

জনাব রাজমোহন বাংলাদেশের সাথে প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করায় ভারতের সাবেক সরকার কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেন, “বিজেপি সরকার নিজেদের মধ্যে সমাঝোতা করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, এটা যদি করা যায় তাহলে শেখ মুজিবের প্রতি ভারতের শ্রদ্ধা জানানো হবে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারত পৃথকভাবে খুব বেশি এগুতে পারবে না। তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য এই দু’টি দেশের যৌথ উন্নয়ন প্রয়াস দরকার। তাহলেই এই উপমহাদেশের মানুষ পৃথিবীর কাছে একটা পরিচিতি লাভ করবে।”

বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক এ করিম বলেন, “প্রত্যেক জাতির দুঃসময়ে কেউ না কেউ আবির্ভুত হন সেই জাতিকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বাংলাদেশের জন্য এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু, ভারতে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধী আর দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। তিনি বলে, বঙ্গবন্ধু না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।” তিনি উন্নয়নের জন্য যৌথ প্রয়াসের উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সোনার বাংলা হলে এই দক্ষিণ এশিয়াও সোনার উপমহাদেশ হবে।

সভায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া রাষ্টপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। পরে মিলাদ মাহফিল এবং ১৫ আগস্টের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত ও দেশ-জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। বাসস।