শুক্রবার । ডিসেম্বর ১২, ২০২৫
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আদালত ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

গুমের মামলায় ১০ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে


Ghum army persons

টিএফআই সেলে গুম–নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা: ট্রাইব্যুনালে হাজির ১০ সেনা কর্মকর্তা, পলাতকসহ মোট আসামি ১৭

বিগত সরকারের আমলে টিএফআই সেল পরিচালিত গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি বহুল আলোচিত মামলায় সেনাবাহিনীর ১০ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। একই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে সবুজ রঙের প্রিজন ভ্যানে করে ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আনা হয়।

হাজির করা হয় র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), কর্নেল মো. মশিউর রহমান (সাবেক পরিচালক, র‍্যাব গোয়েন্দা শাখা), লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেমকে।

এই মামলায় পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রথমে প্রসিকিউশন বক্তব্য দেবেন, এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের যুক্তি তুলে ধরবেন। পলাতক আসামিদের পক্ষ থেকে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।

এদিকে আদালত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের মূল ফটক থেকে ট্রাইব্যুনাল চত্বর পর্যন্ত পুলিশ, সেনা সদস্য, র‌্যাব, বিজিবি এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার টহল দেখা গেছে।

মামলা ও আগের কার্যক্রম
গত ২৩ নভেম্বর আজকের শুনানির তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল। ওই দিন ১০ কর্মকর্তা সশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়েছিলেন। যদিও তাদের আইনজীবীরা ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদন করেছিলেন, আজ সেই বিষয়ে পুনরায় শুনানি হবে।

ট্রাইব্যুনাল সেদিন মন্তব্য করে বলেছিল, “আইন সবার জন্য সমান—সাবেক প্রধান বিচারপতিও জেলে সশরীরে হাজিরা দিয়েছেন, সাবেক মন্ত্রীরাও হাজির হন।”

পলাতক আসামি শেখ হাসিনার পক্ষে হাজিরার আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। পরবর্তীতে তাকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি মৌখিকভাবে এ মামলায় না লড়ার ইঙ্গিত দেন।

গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। পলাতক আসামিদের সাত দিনের মধ্যে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হলেও কেউ হাজির না হওয়ায় তাদের জন্য স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ করা হয়। এর আগে, ৮ অক্টোবর অভিযোগ দাখিলের পর ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।