Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

beat-momসাতাত্তর বছরেও রেহাই নেই মায়ের। কেন রান্না হয়নি, সেই রাগে মারধর করে বৃদ্ধার মুখ ফুলিয়ে দিল ছেলে।

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে গাইঘাটাতে।

chardike-ad

মুখে কালশিটে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পারুল চক্রবর্তী নামে ওই বৃদ্ধা গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর ছেলে সাধনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ধৃতকে বনগাঁ আদালতে তোলা হবে। পারুলদেবীর চিকিৎসা হয় স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

পুলিশ সূত্রে খবর, গাইঘাটা থানার বৈকারা গ্রামের বাসিন্দা পারুলদেবী তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে নির্যাতনের যে অভিযোগ এনেছেন, তার ভিত্তিতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের উপর পারিবারিক নিগ্রহ প্রতিরোধ আইনের (দ্য মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অব পেরেন্টস অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন অ্যাক্ট, ২০০৭) অধীনে মামলা করেছে পুলিশ।

বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের উপর নির্যাতনের প্রতিরোধ, এবং তাঁদের দেখভাল সুনিশ্চিত করার জন্য তৈরি এই আইন মোতাবেক বয়স্কদের প্রতি অবহেলা, নির্যাতন হলে অভিযুক্তদের জেল, জরিমানা হতে পারে। সম্পত্তির অধিকারও বাতিল হতে পারে। এই ধরনের অভিযোগের দ্রুত মীমাংসার জন্য মহকুমাশাসকের দফতরে বিশেষ ট্রাইবুন্যাল আছে। সেখানে অভিযোগ জানাতে পারেন বৃদ্ধরা।

গাইঘাটার ঘটনাতে আইনের এই বিশেষ ধারায় ধৃতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার কথা জানানো হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সমাজকল্যাণ দফতরকে। বনগাঁর মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধা বিশেষ আইনে বিচার চেয়ে তাঁর দফতরের ট্রাইবুন্যালে আবেদন করতে পারেন।

পারুলদেবীর স্বামী মারা গিয়েছেন বহু আগে। তাঁর চার মেয়ে, দুই ছেলে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এক ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। বৃদ্ধা বড় ছেলে সাধনের সঙ্গে থাকেন। বড় বৌমা মারা গিয়েছেন। পারুলদেবীই বাড়ির যাবতীয় কাজকর্ম করেন। বার্ধক্য ভাতার সামান্য ক’টা টাকা পান। সাধনের নিয়মিত আয় নেই। মদ্যপ অবস্থায় এসে প্রায়ই মারধর করত মাকে।

সপ্তাহ দু’য়েক আগে পারুলদেবী তাঁর নাতি বাবলাকে নিয়ে একই বাড়ির অন্য অংশে আলাদা থাকছিলেন। সাধন আলাদা খাচ্ছিলেন। ‘‘ঠাকুমা কেন বাবার জন্য রান্না করছেন না, সেই রাগেই বুধবার ওঁকে মারধর করেছে বাবা,’’ বলেন বাবলা। পারুলদেবী বলেন, ‘‘ও আগেও আমাকে মারধর করেছে। গালাগালও করত। অনেক বার ক্ষমা করেছি। কিন্তু আর নয়।’’

ঘটনার পর অনুতপ্ত সাধন। তার কথায়, ‘‘অন্যায় হয়ে গিয়েছে। মায়ের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইব। আর এমন হবে না।’’

সুত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা