তারা অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর বিনিময়ে নিজেদের পরিবারে হাসি আনতে চান। কিন্তু সেটা সবসময় সম্ভব হয় না আইন না থাকার কারণে। আর এর জন্য কিছুটা দায়ী ভারতের সাংসদরা।
হয়ত অনেকে বিষয়টি বুঝতে পারলেন না। কথা হচ্ছে ভারতের গর্ভ ভাড়া দেয়া নারীদের নিয়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই নারীরা দরিদ্র। আর তাই পরিবারে সুখ আনতে নিজেদের গর্ভ ভাড়া দিয়ে থাকেন তাঁরা। এই দরিদ্র নারীদের দিয়েই ব্যবসা করে যাচ্ছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও বেসরকারি হাসপাতাল। ভারতে গর্ভ ভাড়া বা সারোগেসি বাণিজ্যের বাজার এখন প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার মতো। কারণ আইন না থাকা ও খরচ কম হওয়ার কারণে বিদেশি সন্তানহীন দম্পতিরা ভারতে বেছে নেন সন্তান লাভের জন্য।
৬৬ বছর বয়সি সাখারাম ভাগতের এখন মোট তিনজন স্ত্রী। ওদের একজনের নাম সাখরি, পরের জন টুকি এবং তৃতীয় বউ ভাগি। ‘‘আমার প্রথম স্ত্রীকে সন্তানদের দেখাশোনা করতে হয়, তাই পানি আনার জন্য দ্বিতীয় বিয়ে করি। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী যখন অসুস্থ হয়ে যায়, তখন পানি আনতে ভীষণ সমস্যা হতো। তাই তৃতীয়বার বিয়ে করি আমি’’, বলেন শাখারাম।
কিন্তু এই যে এত টাকার বাণিজ্য হচ্ছে তার খুব সামান্যই পাচ্ছেন গর্ভ ভাড়া দেয়া নারীরা। শুধু তাই নয়, এসব নারীরা দরিদ্র ও অল্পশিক্ষিত হওয়ায় অনেক সময় তাদের না জানিয়েই তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন সব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা গেছে একটি গবেষণায়। ভারত ও ডেনমার্কের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় জানা গেছে, কিছু সংখ্যক চিকিৎসক সাফল্য নিশ্চিতের আশায় গর্ভ ভাড়া দেয়া নারীকে না জানিয়েই তার গর্ভে পাঁচ থেকে ছয়টি ভ্রূণ প্রবেশ করিয়ে থাকেন। অথচ চিকিৎসাশাস্ত্র বলছে এটি ঠিক নয়। এক্ষেত্রে গর্ভ ভাড়া দেয়া নারীর জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।
এই বিষয়গুলোর সমাধান করতে পাঁচ বছর আগে ভারত সরকার কৃত্রিম উপায়ে গর্ভাধান নিয়ন্ত্রণ বা ‘অ্যাসিস্টেট রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজি বিল’ এর খসড়া তৈরি করেছিল। কিন্তু বিলটি এখনো সংসদে পাস হয়নি। অথচ সেটা হলে গর্ভ ভাড়া নারীদের জন্য ভালো হতো বলে মনে করেন দিল্লির সাংবাদিক অমৃত ধীলন। বিলটি এখনও পাস না করায় তিনি ভারতের সাংসদদের কড়া সমালোচনা করেছেন। ধীলনের এই বক্তব্যটি টুইটারে শেয়ার করে এ ধরনের বক্তব্যের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্যাট্রিসিয়া রোক্কো