Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মেগা সিরিয়ালের সেই টারজান এখন বৃদ্ধাশ্রমে

tarzanছোট বেলায় মেগাসিরিয়াল ‘টারজান’ দেখেন নি এমন মানুষ হয়তো খুজেই পাওয়া যাবে না। হলিউডের সেই বিখ্যাত চরিত্রকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন দেশে নাটক, সিনেমা, গল্প, উপন্যাসসহ আরো অনেক কিছু।

কাল্পনিক চরিত্রের সেই টারজানের আসল নাম মাইকেল পিটার ফোমেঙ্কো। মেগাসিরিয়ালের টারজানের কথা সবাই মনে রাখলেও বাস্তবের টারজানের কথা হয়তো কেউ জানেই না। অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা টারজান খ্যাত পিটারের বয়স এখন ৮৬, আর এই বয়সে তাকে অনেকটা জোর করেই ভবঘুরে জীবনের অবসান ঘটিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়েছে।

chardike-ad

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল বর্তমান জর্জিয়া। এই জর্জিয়াতেই প্রিন্সেস এলিজাবেথ ম্যাচাবেল্লির গর্ভে এবং তৎকালীন সময়ের চ্যাম্পিয়ান ক্রীড়াবিদ দানিয়েল ফোমেঙ্কোর ঔরসে জন্মান পিটার। অর্থাৎ সোজা কথায় বলতে গেলে, পিটারের জন্ম জর্জিয়ার রাজপরিবারে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে ১৯৩০ সালে জর্জিয়া ছেড়ে এই পরিবারটি জাপানে আশ্রয়গ্রহন করেন। কিন্তু মাত্র তিন বছরের মাথায় জাপান চীন আক্রমন করলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ বেধে যায় এবং ফোমেঙ্কো পরিবার আবারও শরণার্থী হিসেবে সিডনিতে চলে আসেন।

১৯৫৬ সালে সিডনিতে যে অলিম্পিক হয়েছিল সেখানে মোট দশটি খেলায় অংশগ্রহন করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মেডেল জিতেছিলেন। কিন্তু পিটারের মনে ক্রীড়াবিদ হবার কোনো বাসনা ছিল না। উল্টো একদিন তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে গেছেন এবং কুইন্সল্যান্ডের জঙ্গলে বাস করতে শুরু করেন। এই জঙ্গলে থাকার সিদ্ধান্তটিও তিনি প্রায় হঠাৎ করেই নিয়েছিলেন। নিজের ভাষার কারণে সিডনিতে তেমন একটা জুত করতে গোড়া থেকেই পারছিলেন না তিনি, এছাড়াও আধুনিক জীবনযাপনের প্রতি তার শুরু থেকেই একটা অনীহা কাজ করছিল। আর এই অনীহা থেকেই তিনি হোমারের অডিসি’র আলোকে জীবনযাপন শুরু করেন।

নিজের তৈরি ক্যানু নিয়ে পিটার কুইন্সল্যান্ডের জঙ্গল থেকে কুকটাউনের দিকে যাত্রা শুরু করেন। ১৯৫৯ সালে স্থানীয় একটি পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশিত হয়। সেই খবরে বলা হয়, টারজানকে রক্ষা করেছে স্থানীয় আদিবাসী মানুষেরা। জঙ্গলে না খেতে পেয়ে প্রায় মারা যেতে বসেছিলেন পিটার, আর সেই অবস্থা থেকে তাকে আদিবাসীরা বাঁচায়। অথচ এই জঙ্গলেই তিনি খালি হাতে বিশালাকার কুমির ও শুকরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।

১৯৬৪ সালের মাঝামাঝি ভবঘুরে জীবনযাপন এবং অভদ্র ব্যবহারের জন্য পিটারকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও পুলিশ তাকে বেশিদিন আটকে রাখেনি, উল্টো বহাল তবিয়তে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পরেও তিনি অনেকদিন জঙ্গলে জঙ্গলে কাটান। অন্তত ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠির সঙ্গে বাস করতেন এবং আধুনিক মানুষদের সংশ্রব পুরোপুরি ত্যাগ করেছিলেন। যদিও শেষরক্ষা হয়নি পিটারের। অস্ট্রেলিয়া সরকার একপ্রকার জোর করেই পিটারকে জিম্পির কুইন্ডা নামের একটি বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়েছে। এরপর থেকে সেখানেই বাস করছেন তিনি।-বাংলা মেইল