Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দ. কোরিয়ায় কুমারী মায়েদের জন্য ‘বেবিবক্স’

baby-boxদক্ষিণ কোরিয়ায় অবিবাহিত মায়ের শিশুকে কেউ দত্তক নেয় না। আবার সমাজেও এটি মন্দ চোখে দেখা হয়। পিতৃপরিচয়হীন এই শিশুদের আশ্রয় দিতে একটি কমিউনিটি চার্চ স্থাপন করেছে ‘বেবিবক্স’। কোনো অবিবাহিত মা তার জন্ম নেয়া শিশুকে ওই বাক্সে রেখে যেতে পারে।

দক্ষিণ কোরীয় তরুণী জিয়নের ভাষ্য, বিয়ের আগে সে সন্তান সম্ভাবা হয়। মন দুরু দুরু, কী করবে বুঝতে পারছিলো না। এখানে গর্ভপাতও নিষিদ্ধ। সব মিলিয়ে কঠিন মানসিক চাপে পড়ে যায় জিয়ন। অবশেষে সে অনাগত সন্তান জন্ম দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নিজের সন্তানকে দেড় মাস কাছে রেখেছিলো। পরে নিরুপায় হয়ে সন্তানকে ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। হৃদয়বিদারক এ সিদ্ধান্ত ছিল জিয়নের কাছে অনেকটা আত্মহত্যার মতো। সে বলে, “প্রতিদিন কাজে যাওয়ার পথে একটি সেতু পার হতে হয়। মনে হয় লাফিয়ে আত্মহত্যা করি। এ জীবনের কোনো মানে নেই। আমি তাকে ভুলে থাকার চেষ্টা করি। আমরা মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তার ছবি রেখে দিয়েছি। প্রতিদিন দেখি। সন্তানের অভাব প্রতি মুহূর্তে আমাকে কুরে কুরে খায়।” এখনো জিয়নের সন্তানের কথা তার পরিবার জানে না। তবে তার সন্তানকে এরই মধ্যে একটি পরিবার দত্তক নিয়েছে। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, সব শিশুর জন্ম-নিবন্ধন করাতে হবে। অর্থাৎ, এই সন্তানের তথ্য মায়ের কাগজপত্রের সঙ্গে থাকবে।

chardike-ad

অনেক অবিবাহিত নারী যারা মা হয়েছে, তারা কোনোভাবেই সমাজে এটা প্রকাশ করতে চায় না। সন্তানদের তারা পরিত্যাগ করে। অবিবাহিত কিশোরী মায়েদের মধ্যে ৬০ শতাংশই সন্তান পরিত্যাগ করে।

এসব সন্তানের জন্য সিউলের উপকণ্ঠে জুসারাং কমিউনিটি চার্চ-এর পাসটর জং-রাক লি একটি ‘বেবিবক্স’ স্থাপন করেছে। যেসব মা মনে করবে তাদের কোনো উপায় নেই, তারা নিরাপদে এখানে সন্তানকে রেখে যেতে পারে। বক্সের ভেতর রয়েছে দুটি সেনসর। একটি ক্যামেরা। কেউ বক্সে নবজাতক রেখে গেলে ঘণ্টা বাজে। তখন তারা গিয়ে নবজাতক শিশুটিকে নিয়ে আসে।

পাসটর বলে, নতুন এ আইনের ফলে নবজাতক শিশুদের পরিত্যাগ করার সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কারণ এসব বাবা-মা কোনোভাবেই নিজেদের নাম জড়াতে চায় না।

সমালোচকেরা মনে করছে, এই বেবিবক্স নবজাতক সন্তানকে পরিত্যাগ করার বিষয়টিকে আরো সহজ করে দিয়েছে।