Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ওয়াশিংটনেও হামলার হুমকি আইএস’র

islamic-stateপ্যারিসে যেভাবে হামলা চালিয়ে শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, একই ধরনের হামলা যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতেও চালানোর হুমকি দিয়েছে আইএস। প্যারিসে হামলার পর সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটিতে পশ্চিমা দেশগুলোর বিমান হামলার জোরদারের মধ্যে সোমবার একটি ভিডিও বার্তায় এই হুমকি দেয় গোষ্ঠীটি।

ভিডিও বার্তাটি এসেছে ইরাকি ওয়ালিওয়াত কিরকুক নামে আইএসের একটি উপদলের কাছ থেকে। অবশ্য এটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভিডিওটির শুরুতে গত শুক্রবার প্যারিসে চালানো হামলার পর টেলিভিশনে প্রচারিত বিভিন্ন ভিডিও দেখানো হয়। দেখানো হয় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের বক্তৃতা এবং পুলিশি অভিযানের চিত্র।

chardike-ad

হামলায় নিহতদের লাশ ব্যাগে করে সরিয়ে নেয়ার টেলিভিশন চিত্র দেখানোর পর আসেন এক ব্যক্তি, যিনি আইএসের নামে আরো হামলা চালানোর হুমকি দেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সে রাষ্ট্রগুলোকে বলে দিতে চাই, যারা ক্রুসেডে অংশ নিচ্ছে, আল্লাহর নামে বলছি, আল্লাহর ইচ্ছায় তোমাদের জন্যও সেদিন আসছে, যেমনটি আমরা ফ্রান্সের কেন্দ্রস্থল প্যারিসে ঘটিয়েছি। শপথ করে বলছি, আমরা আমেরিকায়ও হামলা চালাব এবং তা হবে দেশটির কেন্দ্রস্থল ওয়াশিংটনে।’

এদিকে তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্যারিসে হামলার দিনেই তুরস্কের ইস্তাম্বুলেও হামলার পরিকল্পনা ছিল আইএসের। তবে তা ব্যর্থ হয়। তিনি হামলায় ব্যর্থ হলেও পরবর্তী হামলার আশংকা একবারে উড়িয়ে দেননি।

তিনি বলেন, আইএসের ব্রিটিশ যোদ্ধারা আবারও প্যারিসের মতো তুরস্কের ইস্তাম্বুলে হামলার পরিকল্পনা করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তুরস্কের এক সিনিয়র কর্মকর্তা শুক্রবার জানান, গত সপ্তাহে অন্যদের সাথে আইএসের ‘সহযোগী’ ডেভিসকে আটক করা হয়। এরাই ইস্তাম্বুলে প্যারিসের মতো হামলা চালাতে পারে। ডেভিস একদল আইএসের ব্রিটিশ যোদ্ধাদের একজন।

ইস্তাম্বুল বিশ্বের জনপ্রিয় পর্যটন স্থানের মধ্যে একটি। রোববার আংকারায় আইএসের সাথে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে সাতজনকে আটক করা হয় বলেও জানায় আরেকটি সূত্র। তবে আটককৃতদের নাগরিক পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

ইরাক ও সিরিয়ার কিছু অংশ দখল করে খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামিক স্টেটবা আইএস। তাদের দমনে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিমান হামলা চালাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। রাশিয়াও আলাদাভাবে অভিযান চালাচ্ছে।

এই অভিযানের মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্যারিসের কেন্দ্রস্থলের ছয়টি স্থানে অস্ত্র ও বোমা নিয়ে হামলা চালায় আইএস। এতে ১২৯ জন নিহত হয়েছেন, যার ৮৭ জনেই মারা যান একটি কনসার্ট হলে।

এ ঘটনার পর গোটা দেশে জরুরি অবস্থা চলছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ শুক্রবার রাত থেকে আরোপিত ওই জরুরি অবস্থা একটানা তিন মাস বলবৎ রাখতে চাইছেন। আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন বলে এক গোপন সূত্র জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই রাজনৈতিক সূত্রটি বলেছে, ‘তিনি রোববার আমাদের কাছে দেশে আরোপিত জরুরি অবস্থা একটানা তিন মাস বলবৎ রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

তবে ফ্রান্সে ১২ দিনের বেশি জরুরি অবস্থা বহাল রাখার নিয়ম নেই। দেশে এর বেশি দিন ধরে জরুরি অবস্থা চাইলে ওলাঁদকে পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে প্যারিসে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। ১২ দিন ব্যাপী ওই সম্মেলনে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দেশগুলোর অংশ নেবে।

তাছাড়া প্যারিসের ভয়াবহ হামলার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন মনে করছেন, সন্ত্রাসী হামলার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তার দেশও। যেসব ব্রিটিশ নাগরিক অবকাশ যাপনে প্যারিসে গেছেন তাদের নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একইসাথে ব্রিটেনের বিমানবন্দর এবং ফেরি টার্মিনালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পরামর্শও দিয়েছেন ক্যামেরন।

শনিবার এই বিবৃতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, প্যারিসে ভয়াবহ এই হামলা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য বড় ধরনের হুমকি। সেই সাথে যুক্তরাজ্যও হামলার ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি। ক্যামেরন তার দেশের নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সাথে এটিও স্পষ্ট করেছেন, সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, আতংকিত হতে বলা হয়নি বা হুমকি দেয়া হয়নি। সূত্র : রয়টার্স ও এএফপি।