Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ওমরাহর নামে মানব পাচার : ৯৫ এজেন্সির শাস্তি, ৬৯টির লাইসেন্স বাতিল

bangladesh-governmentউমরাহর নামে মানব পাচারের অপরাধে ৯৫টি এজেন্সীকে শাস্তি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৬৯টি এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলসহ জরিমানা ও জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ২৬টি এজেন্সিকে আর্থিক জরিমানা এবং ৯টি এজেন্সির অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় পুন:তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শাস্তিপ্রাপ্ত এজেন্সিগুলোর মধ্যে হাব ও আটাবের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের এজেন্সীও রয়েছে।

বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান ধর্ম মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। মন্ত্রী বলেন, ১০৪টি উমরা এজেন্সীর পাঠানো যাত্রীদের মধ্যে ১১ হাজার ৪৮৫জন ফেরত আসেনি। এসব এজেন্সীর অভিযোগ তদন্ত করে ৯৫টি এজেন্সীকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। আর ৯টি এজেন্সীর অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য পুন:তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে শাস্তিপ্রাপ্ত এজেন্সীগুলোর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

chardike-ad

তিনি বলেন, আশা করছি চলতি বছরে পবিত্র উমরা চালু হবে। আমরা মানবপাচারে অপরাধী এজেন্সীসমূহকে শাস্তি দিয়েছি। এ তালিকা সৌদি সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। তারা এটিকে বিবেচনায় নিয়ে শীঘ্রই উমরা ভিসা চালুর পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

সর্ব নিন্ম তিনটির বেশী যেসব এজেন্সির ওমরাহযাত্রী ফেরত আসেনি তাদের পর্যন্ত লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। শাস্তিপ্রাপ্ত এজেন্সীগুলোর মধ্যে যাদের ৯৪০ থেকে ৫০৮ জন পর্যন্ত ওমরাযাত্রী যাদের ফেরত আসেনি তাদে দুই কোটি টাকা জরিমানাসহ লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এজেন্সিগুলো হলো- জিমিনী ট্রাভেলস লি. (লাইসেন্স নং ৭৫), সবুজ বাংলা ইন্টারন্যাশনাল ( লাইসেন্স – ৩৩৩), মারুফ ট্রাভেলস ( লাইসেন্স – ২১৬)।

৪৫১ থেকে ২৭৮ জন পর্যন্ত যাদের ফেরত আসেনি তাদের লাইসেন্স বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্তসহ দেড় কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এজেন্সিগুলো হলো- গোল্ডেন বেঙ্গল ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স- ২৭৩), অ্যালাইট ট্রাভেলস (লাইসেন্স- ২৬২), রব্বানী ওভারসীজ সার্ভিস ( লাইসেন্স – ২৫১), কনকর্ড ইন্টারন্যাশনাল ( লাইসেন্স – ১০), পারাবত ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস লি. ( লাইসেন্স ২৬৩)।

২৭৫ থেকে ২৪০জন পর্যন্ত যাদের ফেরত আসেনি তাদের এক কোটি টাকা জরিমানা ও জামানত বাজেয়াপ্তসহ লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এজেন্সিগুলো হলো- এম এম আর এভিয়েশন (লাইসেন্স ৩১৩), রওশন ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল ( লাইসেন্স ৫৪), ইউনাইটেড স্টারস ট্রাভেলস (লাইসেন্স ২৩৩), আফতাব ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস ( লাইসেন্স ২০২), থ্রি স্ট্রার ট্রাভেলস ( লাইসেন্স ২৬৭)।

এভাবে অন্যান্য এজেন্সির ক্ষেত্রে সংখ্যানুপাতে লাইসেন্স বাতিল, জামানত বাজেয়াপ্ত ও জরিমানা করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব শহীদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোকে শাস্তি প্রদান করা হলো। তদন্ত কমিটির তদন্তে মোট ৭৬টি এজেন্সির অপরাধ পুরোপুরি প্রমানিত, ২০টিআর আংশিক প্রমানিত এবং ৯টির অভিযোগের কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। আর ৫টি এজেন্সি তদন্ত কমিটির শুনানীতে হাজির হয়নি।

উল্লেখ্য, উমাহর নামে মানব পাচারের উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সৌদি সরকার গত মার্চ মাসে বাংলাদেশের জন্য ওমরাহ ভিসা বন্ধ করে দেয়। গত হজ মৌসুমে আর বাংলাদেশের কেউ ওমরাহ ভিসায় ওমরাহ করতে যেতে পারেননি। এবছর ইতিমধ্যেই ওমরাহ মৌসুম শুরু হয়ে গেলেও বাংলাদেশের ওমরাহ ভিসার অনুমতি এখনো পাওয়া যায়নি। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব শহীদুজ্জামান, উপসচিব হজ নাসির উদ্দিন, জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনকর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন। তবে ধর্ম সচিব চৌধুরী বাবুল হাসান নিজ দফতরে থাকলে সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না।