শনিবার । জুন ২১, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক প্রবাস ২৩ মার্চ ২০১৭, ৫:০০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলেন পার্ক গুন হে


base_1490111008-5

দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে গতকাল কৌঁসুলিদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে। নির্বাহী ক্ষমতা বলে কয়েক মাস ধরে জিজ্ঞাসাবাদ এড়ালেও সাংবিধানিক আদালত তার অভিশংসনের পক্ষে রায় দেয়ায় কৌঁসুলিদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে বাধ্য হন তিনি। তবে আদালতে পৌঁছে তদন্তকাজে সার্বিক সহযোগিতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পার্ক।

গত বছর পার্ক গুন হের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছোয়দ সুন-সিলকে প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ এবং দক্ষিণ কোরীয় কনগ্লোমাটেরগুলোর কাছ থেকে চাঁদা তোলার সুযোগ করে দেন পার্ক। ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্যামসাং গ্রুপসহ স্থানীয় অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে চাঁদা প্রদানে বাধ্য করেন তিনি। চইয়ের দুটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭ কোটি ডলার চাঁদা দেয় কনগ্লোমারেটগুলো। এছাড়া প্রশাসনিক পদে নিযুক্ত না হয়েও কূটনীতিক ও শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা মনোনয়নসহ রাষ্ট্রের আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন ছোয়ে।

পার্ক গুন হের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারি অনুগ্রহ প্রদানের বিনিময়ে স্যামসাং গ্রুপের ভবিষ্যত্ কর্ণধার লি জে ইয়োংয়ের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করেছেন তিনি। সেসঙ্গে সমালোচনাকারী শিল্পীদের একটি ‘কালো তালিকা’ তৈরি করতে কর্মকর্তাদের বাধ্য করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে কালো তালিকাভুক্ত শিল্পীদের প্রকল্পে সরকারি ভর্তুকি প্রদান বন্ধ করা হয়। এছাড়া ছোয়ে সম্পর্কিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে হুন্দাই ও ইস্পাত নির্মাতা পসকোকে লাভজনক চুক্তি করতেও বাধ্য করেন পার্ক গুন হে। তবে একাধিকবার নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন পার্ক। বরং ছোয়ের বিরুদ্ধে বন্ধুত্বের সম্পর্ক অপব্যবহারের অভিযোগ তোলেন তিনি।

গত বছরের শেষে প্রেসিডেন্টের দুর্নীতির বিরুদ্ধে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে পড়লে ডিসেম্বরে পার্কের অভিশংসনের পক্ষে ভোট প্রদান করেন পার্লামেন্টের অধিকাংশ সদস্য। চলতি মাসের ১০ তারিখ পার্লামেন্টের রায় বহাল রাখেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। ফলে দায়মুক্তির সুযোগ হারান তিনি।

গতকাল সকালে গাড়িতে করে নিজের বাসভবন থেকে সিউলের জেলা আদালতে পৌঁছেন পার্ক গুন হে। এ সময় রাস্তার দুপাশে সমবেত জনতা পতাকা নেড়ে তার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই কৌঁসুলিদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন তিনি। দুজন কৌঁসুলি ও একজন তদন্তকারী কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চালান। এ সময় পার্ক গুন হের আইনজীবী তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের কোনো এখতিয়ার ছিল না তার।