উত্তর কোরিয়ার জনগণ আমেরিকাকে ঘৃণা করে যার শুরুটা হয়েছিল একটি যুদ্ধের মাধ্যমে; যার কথা আমেরিকা প্রায় ভুলতে বসেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, বিশ্বের দুই পরাশক্তি কোরিয়াকে ৩৮ ডিগ্রি সমাক্ষরেখায় দুইভাগে বিভক্ত করে।

chardike-ad

ভাগ করার পর দক্ষিণ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আমেরিকা এবং উত্তর অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। এর মাধ্যমে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। দি রিপাবলিক অব কোরিয়া বা সাউথ কোরিয়া এবং ডেমোক্রাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া বা নর্থ কোরিয়া।

নর্থ কোরিয়া সাউথের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে চায় এবং আক্রমণ করে। ১৯৫০ সালের ২৫ জুন শুরু হয় কোরিয়া যুদ্ধ। নর্থ কোরিয়া তাদের জনগণকে বলে যে আমেরিকা এই যুদ্ধের মূল হোতা। ওই যুদ্ধের তিন বছরে প্রায় দশ লাখ কোরিয়ান প্রাণ হারান, যার মধ্যে সাধারণ নাগরিকের সংখ্যাই ছিলে প্রায় ছয় লাখ। যুদ্ধের ভয়াবহতা ১৯৫৩ সালে শেষ হয়। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এই দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে সেই যুদ্ধ আজও চলছে।

এর মূল উদাহরণ হচ্ছে আজ পর্যন্ত দেশ ‍দুটির মধ্যে কোনও ধরনের শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। একটি বিষয়কে খুব সুক্ষ্মভাবে প্রতিটি কোরিয়ানদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়। আর তা হচ্ছে ‘আমেরিকা বিরোধীতা’।

দেশটির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি কিম সাং, তার ছেলে জেনারেল কিম জন টু এবং নাতিন মার্শাল কিম জন উন। প্রত্যকেই ছিলেন আমেরিকা বিরোধী। যা তাদের বক্তব্য ও ভাষণের ভিতর দিয়ে ফুটে ওঠতো। সারা বিশ্বে এক চেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করায় তারা আমেরিকাকে দোষারপ করতো।

এ কারণে নর্থ কোরিয়ার সঙ্গে আমেরিকার অর্থনৈতিক শত্রুতার সম্পর্ক তৈরি হয় এবং দেশটির কাছে আমেরিকা আজীবনের হুমকি হিসেবে উপস্থাপিত হয়। এই বিষয়গুলোকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নর্থ কোরিয়ার শাসকরা দেশটির জনগণদের একত্রিত করে।

সম্প্রতি পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটন ডিসির মধ্যেকার উত্তেজনাকে ব্যবহার করে দেশটির শাসক তাদের জনগণ ও সেনা বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করে। বাইরের শত্রু আমেরিকানদের কথা বলে দেশটির শাসকরা জনগণকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে এবং ভিন্ন রাজনৈতিক মতকে কঠোরভাবে দমন করে।