Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দেশে ফিরে মরার আকুতি প্রবাসী বাংলাদেশি মোহাম্মদ মিয়ার

mohammad-miaস্ত্রী, সন্তানসহ দেশের মাটিতে ফিরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চান সংযুক্ত আরব আমিরাতে চিকিৎসাধীন এক প্রবাসী বাংলাদেশি। কিন্তু তার এই শেষ ইচ্ছা থমকে গেছে অর্থের কাছে। ৬০ বছর বয়সী মোহাম্মদ মিয়া হার্টের সার্জারির চিকিৎসার জন্য আমিরাতের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

চাকরি হারিয়ে চিকিৎসায় নিঃস্ব মোহাম্মদ মিয়ার পাসপোর্ট আটকে রেখেছে দুবাইয়ের একটি হাসপাতাল। পাওনা অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত সেই পাসপোর্ট তাকে ফেরত দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

chardike-ad

পেশায় অফিস সহকারী মোহাম্মদ মিয়া দুই সন্তানের জনক। গত মে মাসে অফিস চলাকালীন আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হারিয়ে ফেলেন শ্রবণশক্তি।

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ আমি কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। আমার মনে হচ্ছিল, মাথা চারদিকে ঘুরছে।’ পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মোহাম্মদ মিয়া। এরপর চলে যান কোমায়।

‘আমি বুঝতে পারছিলাম না কি ঘটছে। জ্ঞান ফিরে নিজেকে হাসপাতালের বিছানায় আবিষ্কার করি। চিকিৎসক আমাকে জানান, তিনদিন ধরে সংজ্ঞাহীন ছিলাম এবং হার্টের একটি শিরা ছিড়ে গেছে।’

অপারেশনের পর আংশিক ঠিক হলেও এখনো খুব অসুস্থ তিনি। এখন আর কোনো কাজ করতে পারেন না প্রবাসী এই বাংলাদেশি। আমিরাতে আইনি ফাঁদে আটকা পড়েছেন তিনি।

তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে; এর মানে হচ্ছে তিনি এখন আর আমিরাতের বৈধ বাসিন্দা নন। কিন্তু অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার পাসপোর্ট ফেরত দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। থাকার জন্য কোনো বাসাও নেই; বন্ধুদের দেয়া সহায়তায় আমিরাতে দিন পার করছেন তিনি।

মোহাম্মদ মিয়া বলেন, ‘আমি এই দেশকে (সংযুক্ত আরব আমিরাত) ভালোবাসি কিন্তু কোনোভাবেই কাজ করতে পারছি না। আমার সময় ফুরিয়ে এসেছে। আমার মনে হয় শিগগিরই মারা যাবো। আমি স্ত্রী, সন্তানসহ বাংলাদেশে মরতে চাই।’

‘আমি কীভাবে তাদের অর্থ পরিশোধ করবো। আমার কোনো অর্থ নেই। বর্তমানে বেকার হয়ে পড়েছি। আমার সব চাওয়া হচ্ছে, আমি যেন পাসপোর্ট ফেরত পাই এবং দেশে গিয়ে মরতে পারি।’

প্রবাসী এই বাংলাদেশি বলেন, ‘আমার কিছুই নেই। বন্ধুরা আমাকে খাবার কিনে দেয়। তাদের বাড়িতে থাকতে দিয়েছে। অামি তাদেরকে বলেছি, শিগগিরই চলে যাবো। কিন্তু তারা চিন্তিত যে, আমি রাস্তায় প্রচণ্ড তাপ ও বিনা খাবারে মারা যাবো।’

সমাজের কোনো ব্যক্তি অথবা দাতা গোষ্ঠী মোহাম্মদ মিয়ার হাসপাতাল বিল পরিশোধে এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা দুবাইয়ের দার আল বার স্যোসাইটির যাকাত ও সামাজিক সেবা বিভাগের ব্যবস্থাপক হিশাম আল জাহরানির। এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযাগ করছেন তিনি।

জাহরানি বলেন, মোহাম্মদ মিয়ার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৩৮ হাজার আমিরাতি দিরহাম (বাংলাদেশি ৮ লাখ ৩৪ হাজার ২০৮ টাকা) পরিশোধ করতে বলেছে। এই অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত তিনি আমিরাতে গৃহহীন, বেকার ও অসুস্থ অবস্থায় আটকা থাকবেন।