Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

উত্তাল সাগরে দুই নারীর ভয়ংকর পাঁচ মাস

sea-boatপ্রশান্ত মহাসাগরের বুকে পাঁচ মাস ধরে ভাসছিলেন তাঁরা। নৌকার ইঞ্জিন নষ্ট হয়েছিল। ভেঙে যায় মাস্তুলও। মাঝসমুদ্রে হাঙরের হামলা, খারাপ আবহাওয়া। তারপরও বাঁচার লড়াই থামেনি।

ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, অসম্ভব মনের জোরই বাঁচিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই নারী নাবিক জেনিফার অ্যাপল ও তাশা ফুইয়াভাকে। তাঁরা দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের হনলুলুর বাসিন্দা। সঙ্গে ছিল পোষা কুকুর—জিউস ও ভ্যালেন্টাইন। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গত সপ্তাহে তাঁদের উদ্ধার করে মার্কিন নৌসেনা।

chardike-ad

গত ৩ মে জাহাজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই থেকে ফ্রেঞ্চ পলেনিসা দেশের দ্বীপ তাহিতির দিকে পাড়ি দিয়েছিলেন জেনিফার অ্যাপল ও তাশা ফুইয়াভা। অভিযানের নেশাতেই ঘর ছেড়েছিলেন তাঁরা। পথে বিপদের মুখে পড়ে তাঁদের জাহাজ। ৩০ মে খারাপ আবহাওয়ায় নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যান তাঁরা। সঙ্গে ছিল পানি পরিশুদ্ধ করার যন্ত্র ও এক বছরের মতো শুকনো খাবার। সেটুকুই ছিল সম্বল।

মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ বিপদ থেকে উদ্ধার করে দুজনকে। ইউএসএস অ্যাশল্যান্ডে নামে ওই জাহাজে দাঁড়িয়ে ভয়াবহ দিনগুলোর কথা মনে করে জেনিফার বলেন, ‘প্রতিদিনই মনে হতো, আজকের দিনটাই শেষ দিন, আজকের রাতটাই বোধ হয় শেষ রাত।’

নৌকার ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর পালের ওপরে ভরসা করেই তাহিতি পৌঁছানোর আশা করছিলেন তাঁরা। তবে অল্প সময়ের মধ্যে ভেঙে যায় মাস্তুলও। ঢেউয়ে ভাসতে ভাসতে বারবার রাস্তা হারিয়েছেন তাঁরা। অন্য জাহাজের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিপৎসংকেত পাঠালেও লাভ হয়নি। তাঁদের নৌকা এতটাই গভীর সমুদ্রে ছিল যে কোনো সংকেতই কোথাও পৌঁছায়নি।

এমনভাবেই কাটে আরও চার মাস। গত বুধবার দক্ষিণ-পূর্ব জাপান থেকে ৯০০ মাইল দূরে তাইওয়ানের একটি জাহাজ জেনিফার ও তাশার নৌকাটি দেখতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় মার্কিন নৌবাহিনীকে। এর ঠিক পরের দিন সকালেই ইউএসএস অ্যাশল্যান্ড জাহাজ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

পাঁচ মাসের এই কঠিন যাত্রায় ভয়ের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন জেনিফার ও তাশা। জেনিফার বলেন, ভয়ংকর হাঙর হামলা চালিয়েছিল। প্রথম দিন সুবিধা করতে না পেরে পরদিন আবার হামলা চালায়। নৌকাটি শক্ত হওয়ায় বেঁচে যান তাঁরা। এ ছাড়া ১১টি ভয়ংকর ঝড়ের মুখে পড়েন। কোনো কোনো ঝড়ে ৩৭ থেকে ৫২ ফুট উঁচু ঢেউ মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁদের। প্রথম আলো