Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধলে চিত্র কেমন হবে?

kimএই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হলে কী করতে হবে এবং এর ফলাফল কী হবে- সে সম্পর্কে হিসাব-নিকাষ করে এক চিঠিতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের আভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগন।

পেন্টাগন মনে করে, সন্দেহাতীতভাবে উত্তর কোরিয়ার সব পরমাণু অস্ত্রক্ষেত্রের অবস্থান নির্ণয় ও সেগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেদেশে স্থলবাহিনীর মাধ্যমে আগ্রাসন চালাতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। তবে যুদ্ধ শুরু হলে উত্তর কোরিয়া জৈবিক ও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

chardike-ad

চিঠিতে পেন্টাগন মার্কিন আইনপ্রণেতাদের জানিয়েছে, যুদ্ধ বাঁধলে উত্তর কোরিয়া তাদের পরমাণু অস্ত্র দিয়ে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে এবং তাদের ভূগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনা সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে যুক্তরাষ্ট্রের কী ধরনের সক্ষমতা আছে, তা খোলামেলা আলোচনার বিষয় নয়। এর জন্য আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে গোপনে বিস্তারিত আলোচনা করার প্রস্তাব দিয়েছে পেন্টাগন।

কোরীয় উপদ্বীপে যুদ্ধ শুরু হলে পিয়ংইয়ং বায়োলজিক্যাল (জৈবিক) অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন পেন্টাগনের কর্মকর্তারা। তারা আরো জানিয়েছেন, রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতে উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা নার্ভ, ব্লিস্টার, ব্লাড ও চকিং এজেন্ট উৎপাদন করে থাকে।

কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের দুই আইনপ্রণেতা পেন্টাগনের কাছে জানতে চান, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধলে বেসামরিক লোকজনসহ যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্র শক্তি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও গুয়ামে সামরিক বাহিনীতে ‘সম্ভাব্য কী পরিমাণ প্রাণহানি হতে পারে’। তাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পেন্টাগনের উপপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মাইকেল জে ডুমন্ড এক চিঠিতে সম্ভাব্য যুদ্ধের চিত্র কেমন হবে, তা জানিয়েছেন।

সম্ভাব্য যুদ্ধের বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে পেন্টাগনে পাঠানো চিঠিতে ক্যালিফোর্নিয়া ও আরিজোনার দুই ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা যথাক্রমে টেড লিউ ও রুবেন গ্যালিগো বলেন, ‘কয়েক দশক ধরে দেখছি, অন্য কোনো দেশে হামলা বা আগ্রাসন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে পরে তা নিয়ে আমাদের সেনা, করদাতা এমন কি এ অঞ্চলেও মতানৈক্য সৃষ্টি হয়।’ তারা আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র বাহিনীতে কী পরিমাণ হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কী পরিমাণ বেসামরিক লোকজন যুদ্ধের শিকার হতে পারে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার বহাল থাকাসহ হামলার পর ‍কী হবে, সে বিষয়ে পরিকল্পনা সম্পর্কে আমরা এখনো বিস্তারিত কিছু শুনতে পারিনি।’

টেড লিউ ও রুবেন গ্যালিগোর আশঙ্কার বিষয়ে মাইকেল জে ডুমন্ড শেষ টেনেছেন এভাবে- ‘যুদ্ধে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হবে, তার চিত্র দেখানো দুরুহ।’ তবে তা নির্ভর করছে উত্তর কোরিয়ার হামলার ‘ধরন, তীব্রতা ও যুদ্ধের ব্যাপ্তির ওপর’। দক্ষিণ কোরিয়ার আশ্রয়শিবিরে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের ঠাঁই দেওয়া এবং উত্তর কোরিয়ার হামলা থেকে তাদের বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া কতটা সক্ষম হবে, তার ওপর যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির পরিমাণ নির্ভর করছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে ঘনবসিতপূর্ণ ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ রয়েছে। এমন সময় পেন্টাগন থেকে চিঠির জবাব দেওয়া হলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়া সফরে রয়েছেন। উত্তর কোরিয়ার হামলার হুমকিতে উদ্বিগ্ন জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সফর করবেন তিনি। উত্তর কোরিয়াকে থামাতে চীন ও রাশিয়ার শক্তিশালী সমর্থন চান ট্রাম্প।

তথ্যসূত্র : দি ইন্ডিপেনডেন্ট অনলাইন