Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়জয়কার

Korean gamesরিকার্ভ দলগত লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিপক্ষ ভারত। বিশ্ব পরাশক্তি কোরিয়ার শুরুটা একটু নড়বড়ে, ভারতের দুর্দান্ত। সময়ের সঙ্গে কোরিয়া আপন ছন্দে ফিরেছে, পিছিয়েছে ভারত। এ ইভেন্টের মতো গতকাল শেষ হওয়া এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপে আধিপত্য ছিল কোরিয়ারই।

এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ স্বর্ণপদকের আটটি জিতেছে দেশটি। ছেলে ও মেয়েদের রিকার্ভ ব্যক্তিগত, দলগত ও মিশ্র দলগত— পাঁচ স্বর্ণপদকই কোরিয়ানদের দখলে। নারীদের কম্পাউন্ড ব্যক্তিগত ও দলগত ইভেন্টে দেশটির ছিল আধিপত্য। ছেলেদের কম্পাউন্ড ব্যক্তিগত ইভেন্টে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ভারতের অভিষেক ভারমার কাছে কোরিয়ার কিম জং হো হারলেও দলগত ইভেন্টে প্রতিশোধ নিয়েছে কোরিয়া। কম্পাউন্ড মিশ্র দলগত ইভেন্টেও আধিপত্য ছিল বিশ্ব আরচারির অধিপতিদের। ছেলেদের ব্যক্তিগত ইভেন্টের মতো নারীদের কম্পাউন্ড দলগত ইভেন্টেও ভারতের কাছে হেরেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

chardike-ad

শীর্ষ তিন আরচারকে দেশে রেখে আসার পরও এ সাফল্য! কীভাবে সম্ভব হলো এটা? প্রশ্নের জবাবে দক্ষিণ কোরিয়া দলের কর্মকর্তা ইয়াং ওয়ান চই বলেন, ‘এখানে যারা এসেছে, তারাও ভালো আরচার। তিনজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ কারণেই তাদের রেখে আসা।’ ২০১৫ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ আসরে ১০ স্বর্ণপদকের ৬টি জিতেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। সে আসরে রিকার্ভ ডিভিশনে মিশ্র দলগত ইভেন্টে চাইনিজ তাইপের কাছে হারলেও এবার রিকার্ভ ডিভিশনের পাঁচ স্বর্ণই নিজেদের দখলে রেখেছে দেশটি।

সর্বশেষ আসরে ছেলেদের কম্পাউন্ড ব্যক্তিগত ও দলগত ইভেন্টে ভারতের কাছে হেরেছে দক্ষিণ কোরিয়া। নারীদের ব্যক্তিগত ইভেন্টে ফাইনালেই আসতে পারেনি দেশটি। রহস্যটা কী? উত্তরে দক্ষিণ কোরিয়া দলের কর্মকর্তা ইয়াং ওয়ান চই বলেন, ‘রিকার্ভ অলিম্পিক ইভেন্ট। এর গুরুত্বই আলাদা। একজন ক্রীড়াবিদের প্রধান লক্ষ্য থাকে অলিম্পিকে স্বর্ণজয় করা। এটাই হয়তো রিকার্ভে ভালো করার প্রধান কারণ।’

বিশ্ব আরচারির পরাশক্তি হয়ে ওঠার গল্পটা জানালেন ইয়াং ওয়ান— ‘অন্যদের তুলনায় আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা অল্প বয়সে খেলার চর্চা শুরু করে। বিভিন্ন ধাপে উঠে আসা তীরন্দাজরা পেশাদারি কাঠোমোর মধ্যে আসে। আমাদের ওখানে অনেক পেশাদার দল রয়েছে। সাফল্যের অনেকগুলো কারণের মধ্যে এগুলো অন্যতম।’

দেশটির প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ নির্দিষ্ট দিনে ২ ঘণ্টা করে শিশুদের আরচারি খেলা। বিশেষভাবে তৈরি তীর-ধনুক দিয়ে এ কার্যক্রমে মূলত খেলার ছলে আনন্দ-উল্লাস করে শিশুরা। এখান থেকেই শুরু আরচারি শিক্ষা। এর পরের ধাপে চলে খেলাটির প্রশিক্ষণ। এভাবে হূদয়ে তীরন্দাজির বীজ বপনের পর তাকে পরিণত করতে চলে ট্রেনিং। কোরিয়ান আরচারি দলের সদস্যকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিশ্ব পর্যায়ে আপনাদের এ আধিপত্যের মূলে কোন বিষয়টি কাজ করছে? উত্তরে ভদ্রলোক বলেন, ‘এখানে গুরুত্বপূর্ণ চারটি বিষয় রয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে, শিশু বয়সে খেলা শুরু করা। বাকি তিনটি হচ্ছে— টেনিং… ট্রেনিং… এবং ট্রেনিং…!’

জনপ্রিয় ‘আইডল স্টার অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ’-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে আরচারি। শিশুদের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পাশাপাশি সংগীত শিল্পীরাও নানা ধরনের পরিবেশনা নিয়ে হাজির হন। এ চ্যাম্পিয়নশিপে থাকেন বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারাও। এভাবেই নানা গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের অংশ হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ায় আরচারি বেশ জনপ্রিয়।

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্ব আরচারিতে দেশটির আধিপত্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামার অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৩ স্বর্ণপদক জিতেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ৯ রুপা ও ৭ ব্রোঞ্জপদক মিলিয়ে অলিম্পিক আরচারি পদক সংখ্যা ৩৯। এ ডিসিপ্লিনে দেশটির পরের স্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র জিতেছে ১৪ স্বর্ণ, ১১ রুপা ও ৯ ব্রোঞ্জ— সবমিলে ৩৪ পদক।