Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সুখ মন্ত্রণালয়!

সিউল, ২৮ অক্টোবর ২০১৩:

অভাব রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের। পাওয়া যাচ্ছে না চিকিৎসার সরঞ্জামও। বাড়ন্ত দুধ, টয়লেট পেপার। নেই বাক স্বাধীনতা। সরকারি হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশের কাছাকাছি। আর কালোবাজারে সাত গুণ বেশি দামে বিকোচ্ছে ডলার।

chardike-ad

নেই, নেই আর নেই। তবু এই নেই-দেশের সাধারণ মানুষকেই হাসি-খুশিতে রাখতে চান ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো! এবং সেই জন্য একটি মন্ত্রণালয়ও খুলতে চলেছেন তিনি।

সুখ মন্ত্রণালয়!

দিন কয়েক আগে মাদুরো ঘোষণা করেন, “উগো শ্যাভেজ এবং সাইমন বলিভারের সম্মানে ‘সামাজিক সুখ’ নাম দিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রণালয় তৈরি করব বলে ঠিক করেছি।” দক্ষিণ আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সেনানি ছিলেন বলিভার।

কিন্তু এই সুখ মন্ত্রণালয়ের কাজ কী?

মাদুরো জানিয়েছেন, দেশ থেকে দারিদ্র দূর করার জন্য প্রচুর টাকা ব্যয় করে চাভেজ বহু সামাজিক প্রকল্প তৈরি করেছিলেন। প্রয়াত প্রেসিডেন্টের স্বপ্নের সেই প্রকল্পগুলির মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করবে এই মন্ত্রণালয়। প্রেসিডেন্টের কথায়, “এই মন্ত্রণালয়ের মূল লক্ষ্য হবে সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া, দুর্বল মানুষের ঘরে সুখ পৌঁছে দেয়া। যে সব মানুষ ভালোবাসতে জানেন। যারা নিজেদেরকে বিপ্লবী বলেন।”

image_51587_0কিন্তু অভাব-অভিযোগ তো সে দেশের মানুষের নিত্যসঙ্গী। দুর্নীতি যেখানে শিকড় ছড়িয়েছে, সেখানকার মানুষ সুখে থাকবেন কী করে? তা সে যতই মাদুরো মন্ত্রক খুলুন না কেন?

কিন্তু হাতিশালে হাতি, ঘোড়াশালে ঘোড়া আর রত্নভাণ্ডারে সোনা-দানা ঠাসা থাকলেই যে কোনও দেশের নাগরিক সুখে থাকবেন, তা কিন্তু নয়। হাতের কাছেই তার প্রমাণ রয়েছে। অগাধ ঐশ্বর্য্য সত্ত্বেও সুখী রাষ্ট্রের তালিকায় মার্কিন মুলুক রয়েছে ১৭ নম্বরে। সুখের মাপকাঠিতে ওবামার দেশকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ডেনমার্ক, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, সুইৎজারল্যান্ড। ভেনেজুয়েলা রয়েছে ২০ নম্বরে।

সম্ভবত এই তথ্যই ভরসা দিচ্ছে মাদুরোকে। কিন্তু তাঁর এই পদক্ষেপে সুখী নন ভেনেজুয়েলাবাসীদের একাংশ। তাই প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে রাস্তায়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও। কারাকাসের ফল বিক্রেতা ভিক্টর রে-র কটাক্ষ, “এখন বিয়ার মন্ত্রণালয়ের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছি! সেটা আমার মতো সমস্ত সুরাপ্রেমীদের সুখে রাখবে।” দোকান থেকে উধাও হয়ে গিয়েছ দুধ আর টয়লেট পেপার।

বছর একত্রিশের গৃহবধূ লিলিয়ানা আলফেঞ্জো বলেন, “আশা করি সুখ মন্ত্রণালয় এমন কিছু ব্যবস্থা নেবে, যাতে আমরা দোকানে গিয়ে দুধ, টয়লেট পেপার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলি পাই।”

তবে এই সব অভাব-অভিযোগে কর্ণপাত করতে রাজি নন মাদুরো। তিনি এখন দেশ জুড়ে বইয়ে দিতে চান সুখের হাওয়া। সূত্র: সংবাদ সংস্থা