সিউল, ২৬ নভেম্বর ২০১৩:
বিদেশে বসবাসরত অনাবাসী বাংলাদেশীদের তথ্য সংরক্ষণ এবং তাদেরকে আর্থিক সেবাভূক্তির আওতায় নিয়ে আসতে বাংলাদেশ ব্যাংক তার ওয়েবসাইটে এনআরবি ডাটাবেজ ওয়েবলিঙ্ক চালু করেছে। এই ডাটাবেজে প্রবাসীদের কর্মস্থল, পেশা ও বসবাসের তথ্যদি সংরক্ষিত থাকবে। এর মাধ্যমে অনাবাসীরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এ সব অনাবাসীকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিয়মিত ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন আর্থিক সেবা সম্পর্কে অবহিত করবেন।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গভর্নর ড. আতিউর রহমান এর উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাহরাইন প্রবাসী মোবারক হোসেন, কানাডা প্রবাসী সুব্রত কুমার এবং ইতালী প্রবাসী হোসনে আরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের তথ্য ডাটাবেজে অন্তর্ভূক্ত করেন।
গভর্নর বলেন, প্রায় এক কোটি অনাবাসী বাংলাদেশী বিদেশে কর্মরত আছেন। এ সব অনাবাসীর তথ্যাদি একই প্লাটফরমে সন্নিবেশের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে এই ওয়েবলিঙ্ক চালু করা হলো। এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন আর্থিক সেবা সম্পর্কে যেমন জানতে পরবেন তেমনি অনাবাসীদের মধ্যে এটি একটি সামাজিক নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করবে।
অনাবাসীদের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান এই বার্তাটিও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া যাবে বলে তিনি জানান।
গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ‘এনআরবি ডাটাবেস’ নিয়ন্ত্রণকারী বা বাধ্যবাধকতাপূর্ণ কোনো তথ্যভান্ডার নয়। বরং এটি বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশীদের আর্থিক সেবার আওতায় আনার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্যে একটি প্রচারণা ও সেবামূলক তথ্যভান্ডার হিসেবে কাজ করবে। এই তথ্যভান্ডারে একজন অনিবাসী স্বেচ্ছায় নিজে তার তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক নিজ উদ্যোগে সংগৃহীত তথ্যও এখানে যুক্ত করতে পারবে।
ফিলিপাইন, ভারতসহ কয়েকটি দেশের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, যেসব দেশ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনাবাসীদের যুক্ত করতে পেরেছে তাদের উন্নতিও দ্রুত হয়েছে। যথাযথ সম্মান দিয়ে অনাবাসীদের আয় বিনিয়োগে নিয়ে আসতে পারলে বাংলাদেশও দ্রুত এগিয়ে যাবে। আর্থিক অন্তর্ভূক্তি সফলতার আরেকটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।
গভর্নর বলেন, ভৌগলিক দূরত্ব এবং পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যাংকিং সেবার সুবিধা গ্রহণ করতে পারছে না। দূরত্বের পাশাপাশি প্রচারণার অভাব এবং তথ্য প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা আর্থিক সেবাভুক্তিকে ব্যাহত করছে। এই এনআরবি ডাটাবেস প্রবাসীদের এ সব প্রতিবন্ধকতা দূর করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা, নির্বাহী পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান, মো. আহসানউল্লাহ এবং সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশী এম ই চৌধুরী শামীম বক্তৃতা করেন।