Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

chicken-market‘জীবিত বিক্রি করা যাবে না’ সাফ জানিয়ে দিয়েই খাঁচায় মুরগিটা ভরে রাখলেন দোকানি। কারণ জানতে চাইলে সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘জবাই ছাড়া মুরগি বিক্রি করি না, সমস্যা আছে।’ কী সমস্যা সে প্রশ্ন করার আগেই অন্য দোকানে যাওয়ার পরামর্শও দিয়ে দেন অভিমানী দোকানি!

এই দৃশ্য চট্টগ্রামের চকবাজার কাঁচাবাজারের। ২৫ মে শুক্রবার দুপুরে বাজার করতে গিয়েছিলেন সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহিম। রাস্তার পাশ ঘেঁষা মুরগির দোকান থেকে তিনি একটি সোনালি প্রজাতির মুরগি দর দাম করেন। দর কষাকষিতে একমতে পৌঁছলেও ‘জীবত মুরগি’ বাসায় নিতে চাইতেই দেখা দিল বিপত্তি!

chardike-ad

ক্রেতা জীবিত মুরগি নিতে চাচ্ছেন, কিন্তু বিক্রেতা ‘জবাই ছাড়া’ মুরগি বিক্রি করবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন। ভুক্তভোগী ওই ক্রেতা বলেন, ‘দরদাম করে একটা মুরগি কিনলাম। কিন্তু দোকানি জীবিত বিক্রি করবে না। কারণ কী বুঝলাম না। অন্যান্য দোকানেও একই অবস্থা। কেউই জবাই করা ছাড়া মুরগি বিক্রি করছে না।’

চকবাজার কাঁচাবাজারের মুরগি ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে কারো কাছেই কোন কারণ ব্যাখ্যা করছেন না। তাদের প্রায় সবার একই বক্তব্য, ‘জবাই ছাড়া মুরগি বিক্রি করি না, সমস্যা আছে। অন্য দোকনে দেখেন।’

ক্রেতারা জানিয়েছেন অন্য দোকানে গেলেও একই কথা বলেন দোকানিরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চকবাজার কাঁচাবাজারে প্রায় ১৭টি মুরগির দোকান আছে। অন্যান্য সময়ের চাইতে রমজান মাসে মুরগির চাহিদা বেশি থাকায় দামও বাড়িয়েছে বেশ। প্রচুর বিক্রি হলেও অধিকাংশ দোকানেই ডিজিটাল ওজন মেশিন নেই।

গোপন সূত্রে জানা গেছে, বাটখারা দিয়ে মাপ দেয়ার সময় মুরগির ওজনে কারচুপি করেন ব্যবসায়ীরা। এক দিকে বাড়তি দাম অন্যদিকে বাটখারা দিয়ে ৭৫০ থেকে ৮৫০ গ্রাম ওজনের মুরগিকে এক কেজি ওজনের বলে প্রতারণা করছেন তারা। মাপ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে চতুর বিক্রেতা তড়িঘড়ি করে মুরগী জবাই দিয়েই পলিথিনে ভরে ক্রেতাকে ধরিয়ে দিচ্ছেন।

একটু অনুসন্ধান করতেই বেরিয়ে এলো রহস্যের উত্তর। বাটখারা দিয়ে কম ওজনের মুরগি এক কেজি বলে চালিয়ে দেয়া হয়। জবাই করে ক্রেতার হাতে তুলে দেয়ার পরে পুনরায় ওজন দিয়ে কম পেলেও বিক্রেতার কোন দায় থাকে না। কারণ বিক্রেতারা তখন নাড়ি-ভুড়ি ও চামড়া ফেলে দেয়ায় ওজন কমে গেছে বলে অজুহাত দেখাতে পারেন।

কিন্তু জীবিত মুরগি বিক্রি করলে ক্রেতা বা কোন বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা অন্যত্র ডিজিটাল মেশিনে ওজন করলে প্রতারণা ধরা পড়ে যাবে। মূলত এই আশঙ্কা থেকেই জীবিত মুরগি বিক্রির পরিবর্তে জবাই করা মুরগি বিক্রি করছেন তারা। আর এভাবেই প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার প্রতারণা করছে এই অসাধু চক্রটি।

২৪লাইভনিউজপেপার এর সৌজন্যে