Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বগুড়ায় বাল্যবিয়ে বন্ধের নামে ৪০০ জনের খাবার নষ্ট!

bogura-marriageবগুড়ায় বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে বিয়েবাড়িতে ৪০০ জনের খাবার মাটিতে ফেলে দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। ওই সময় বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে পড়েন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুক্রবার বিকালে বগুড়া শহরের নারুলী খন্দকার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তিনজনকে আটক করলেও অসুস্থ হয়ে পড়ায় একজনকে ঘটনাস্থলেই ছেড়ে দেয়। পরে আটককৃত অপর দুইজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়া হয়।

chardike-ad

জানা যায়, নারুলী খন্দকারপাড়ার দরিদ্র অটোটেম্পো চালক বাবু মিয়া তার দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে রজনী খাতুনের বিয়ে ঠিক করেন সোনাতলা উপজেলার হলিদাবগা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রকির সঙ্গে। শুক্রবার বিয়ের দিন নির্ধারণ করে প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ মাস্টারের বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুপুরের পর থেকে সেখানে লোকজন খাওয়া দাওয়া শুরু করে। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে বাবু মিয়া ও তার স্ত্রী ফাইমা মেয়েকে নিয়ে সটকে পড়েন। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিয়ের আয়োজন করার অভিযোগে বাবু মিয়ার মামা সেকেন্দার আলী (৬৫), খালা সুইটি বেগম এবং বাবু মিয়ার ভাই রকিকে আটক করে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় ইউএনও নিজ হাতে রান্না করা ৪০০ জনের খাবার মাটিতে ফেলে দেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ওই সময় তিনি চেয়ার টেবিল উল্টে ফেলে দেন বলেও অভিযোগ তাদের।

এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাতে আটক অবস্থায় সেকেন্দার আলী অসুস্থ হয়ে পড়লে লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। একপর্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জনতার তোপের মুখে পড়ে এবং সেকেন্দার আলীকে ছেড়ে দেয়। পড়ে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদরোগ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

একসঙ্গে ৪০০ জনের খাবার নষ্ট করার দৃশ্য দেখে লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের কাছে খাবার নষ্ট করার কারণ জানতে চায়। এনিয়ে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

আটককৃত দুইজনকে নিয়ে যাওয়া হয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে বাধা দেয়ার দায়ে আটক সুইটি বেগমকে এক মাস এবং রকিকে দুই মাস কারাদণ্ড দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

বগুড়া সদর থানার এসআই জিলালুর রহমান জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখে মেয়ের আত্মীয়-স্বজন উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং বিচারকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। একারণেই আদালতের বিচারক নিজ হাতে খাবারগুলো ফেলে দিয়েছেন।

তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, বিয়েবাড়িতে খাবার কে নষ্ট করেছে তা তিনি দেখেননি। বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে গেলে আদালতের কাজে বাধা দিলে দুইজনকে আটক করে সাজা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।