Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে কিউবি

qubeeব্যবসায়িকভাবে সাফল্য না পাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কিউবি। জানা গেছে, অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যকার টানাপড়েন কিউবির আর্থিক ভিত দুর্বল করেছে। লং টার্ম ইভল্যুশনের (এলটিই) জন্য বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও জোগান আসছে না। এসব কারণে এরই মধ্যে জনবল কমিয়ে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রধান কার্যালয়ও গুলশান থেকে মিরপুরে স্থানান্তর করেছে। এখন বাংলালায়নে গ্রাহক স্থানান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসাই গুটিয়ে নিচ্ছে কিউবি।

সূত্র জানায়, নিজেদের মধ্যে গত মাসে সম্পাদিত এক চুক্তির ভিত্তিতে গ্রাহক হস্তান্তরের কার্যক্রম শুরু করেছে কিউবি ও বাংলালায়ন। চুক্তির আওতায় কিউবির গ্রাহকদের পর্যায়ক্রমে বাংলালায়নের সেবার আওতায় আনা হচ্ছে। রাজস্ব ভাগাভাগির ভিত্তিতে নিজেদের গ্রাহককে বাংলালায়নের কাছে হস্তান্তর করছে কিউবি। এরই মধ্যে কিউবির অনেক গ্রাহকই বাংলালায়নে স্থানান্তরের বার্তা পেয়েছেন।

chardike-ad

বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন ছাড়া নিজেদের গ্রাহক অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরের সুযোগ নেই। এছাড়া দুটি প্রতিষ্ঠান একীভূত হওয়ার ক্ষেত্রে হস্তান্তর হতে পারে। অথবা কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হলে গ্রাহকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাওয়ার সুযোগ দিতে পারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

জানা গেছে, দ্রুতগতির তারবিহীন ইন্টারনেট সেবা দিতে ২০০৮ সালে ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস অ্যাকসেস (বিডব্লিউএ) লাইসেন্স পায় কিউবি। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত নিলামের মাধ্যমে ২১৫ কোটি টাকায় এ লাইসেন্স নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সের নিলামের ক্ষেত্রে এ দর বিশ্বের সর্বোচ্চ। উচ্চমূল্যে লাইসেন্স নেয়ার পর ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে হুমকির মুখে পড়ে কিউবি।

পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন নিয়ে ২০১৩ সালে এলটিই প্রযুক্তি সেবা চালু করে কিউবি। কিন্তু এলটিইর জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও তার জোগান পায়নি প্রতিষ্ঠানটি। আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে একাধিক উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রত্যাশিত সাফল্য আসেনি তাতে। এসব উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ায় এরই মধ্যে জনবল কমিয়ে আনার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় গুলশান থেকে ছোট পরিসরে মিরপুরে স্থানান্তর করা হয়েছে।

কিউবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফয়সাল হায়দার বলেন, এরই মধ্যে বগুড়া ও নারায়ণগঞ্জে স্বল্প পরিসরে এলটিই সেবার কার্যক্রম চালু করেছে কিউবি। সেবার বিস্তৃতিতে নতুন করে বিনিয়োগেরও চেষ্টা চলছে। তবে পরিচালন ব্যয়ের তুলনায় গ্রাহকসংখ্যা কমে আসায় অনেক জায়গায় সেবাটি চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এসব গ্রাহককে হস্তান্তরে বাংলালায়নের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। গ্রাহকের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলালায়ন তাদের সেবা দেবে।

বাংলালায়নের চিফ মার্কেটিং অফিসার জিএম ফারুক খান বলেন, তাদের গ্রাহকদের সম্ভাব্য গ্রাহক হিসেবে ধরছি। শুধু তাদের সাহায্য নিয়ে নোটিফিকেশন দিচ্ছি। চেষ্টা করছি আরো ভালো প্যাকেজ দিয়ে তাদের বাংলালায়নের সেবার আওতায় আনতে।

বিটিআরসি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালের মাঝামাঝি থেকে ধারাবাহিকভাবে গ্রাহক হারাতে শুরু করে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিনির্ভর সেবাটি। ২০১০ সালে কিউবির মোট গ্রাহকসংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৬৬৬। ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ হাজার ৮৩৬ ও ২০১২ সালে ১ লাখ ২৪ হাজার ৪৯৯। চলতি বছরের মে মাস শেষে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা ৫০ হাজারের নিচে নেমে এসেছে।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ