Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

‘বাংলাদেশে হবে মিনি সিঙ্গাপুর’

shohiduzzaman‘বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচকগুলো রয়েছে ইতিবাচক ধারায়। সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ ব্যবসাবান্ধব। তাই সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা এ দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। সরকার যদি তাদের সুযোগ করে দেয়, তাহলে বাংলাদেশে একটি মিনি সিঙ্গাপুর বানাবেন দেশটির ব্যবসায়ীরা’,- বলছিলেন বাংলাদেশ বিজসেন চেম্বার অব সিঙ্গাপুরের (বিডি চ্যাম) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান। সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুরের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার এবং ব্যবসাবাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে ৮ জুলাই বাংলাদেশ সফরে আসেন সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশনের (এসবিএফ) ব্যবসায়ী নেতাসহ ৩৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল। নেতৃত্বে আছেন এসবিএফ চেয়ারম্যান টেও সিওং সেং। প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন বিডি চ্যামের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান ও সিঙ্গাপুর-ইন্ডিয়া কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসআইসিসিআইয়) ভাইস চেয়ারম্যান প্রসুন মুখার্জি।

chardike-ad

সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সফর সম্পর্কে বিডি চ্যামের প্রেসিডেন্ট শহিদুজ্জামান বলেন, আধুনিক উন্নত দেশেগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুর অন্যতম। বিনিয়োগের জন্য তাদের পর্যাপ্ত অর্থ পড়ে আছে। তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ বিভিন্ন ফান্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পড়ে আছে। এতদিন তারা ইউরোপ, অমেরিকা, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করেছেন। এসব দেশে এখন কিছুটা অস্থিরতা বিরাজ করছে। তাই তারা নতুন করে বিনিয়োগের জন্য জায়গা খুঁজছেন। সিঙ্গাপুরের নতুন বিনিয়োগের গন্তব্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য পরিকল্পনা তাদের। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশে সফরে এসেছেন সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সফরকালে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, বিদ্যুৎপ্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিনিয়োগ ও ব্যবসা-সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া বেজা (সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ), বিডা (বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও এফবিসিসিআইসহ (ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন) বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

সফরকালে ব্যবসায়ী আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে উল্লেখ করে শহিদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচক, সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো। সর্বোপরি বংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ তাদের কাছে সন্তোষজনক। সবকিছু বিবেচনায় সিঙ্গাপুর এ দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। এ জন্য জায়গা প্রয়োজন। সিঙ্গাপুর দুই হাজার একর জমি চেয়েছে। বাংলাদেশ সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সিঙ্গাপুরকে ৫০০ একর জমি দেবে। এখানে বিনিয়োগ করলে আগামীতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আরও জমি দেয়া হবে বলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে বেশকছিু সমস্যা আছে। এর মধ্যে অন্যতম- বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নেয়া। এটি করতে গিয়ে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যায়। এখন সমস্যা কিছুটা কমে আসছে। বিডা এ বিষয়ে সহযোগিতা করছে, আগামীতে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রক্রিয়া যত সহজ হবে, কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস যত কমবে, বিদেশিদের বিনিয়োগে আগ্রহ তত বাড়বে।

বিডি চ্যামের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশে বেশ কয়েকটি খাতে বিনিয়োগ করতে চায় সিঙ্গাপুর। এর মধ্যে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতকে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পর্যটন, ফার্মাসিউটিক্যালস, আবাসন, গার্মেন্টস, জাহাজশিল্প ও সেবাখাতে বিনিয়োগে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা আগ্রহী।

‘চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৫০০ একর জমি সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের জন্য বরাদ্দ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। প্রাথমিকভাবে সেখানে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করা হবে। এ ছাড়া আবাসন ও পর্যটন খাতে বিনিয়োগ হবে। সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের অর্থের সমস্যা নেই। প্রয়োজন জায়গা ও বিনিয়োগ পরিবেশ। এ দুটির নিশ্চয়তা পেলে উন্নত সব প্রযুক্তির সমন্বয়ে শিল্পনগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। সিঙ্গাপুরের সব সুযোগ-সুবিধা যেখানে বসেই পাওয়া যাবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের ওই অংশ হবে মিনি সিঙ্গাপুর’,- বলছিলেন মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান।

রফতানি বাণিজ্যের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে (জুলাই-ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুর থেকে ১৪২ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য ও সেবা আমদানি করেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে দেশটিতে ওই সময়ে বাংলাদেশ রফতানি করেছে মাত্র ১২ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ