preson-bhan
গ্রেপ্তার ছাত্রদের আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হচ্ছে। এ সময় তাঁদের স্বজন, সহপাঠী ও বন্ধুরা সেখানে ভিড় করেন।

পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের পৃথক দুই মামলায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আসামিদের জামিন নাকচ করে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রদ শিকদার কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।

বাড্ডা থানার মামলায় কারাগারে যাওয়া ১৪ ছাত্র হলেন- রাশেদুল ইসলাম, বায়েজিদ, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, এএইচএম খালিদ রেজা, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, সীমান্ত সরকার, ইকতিদার হোসেন, জাহিদুল হক, রিসালাতুল ফেরদৌস, হাসান ও রেদোয়ান আহমেদ।

chardike-ad

আর ভাটারা থানার মামলায় কারাগারে যাওয়া ৮ ছাত্র হলেন- ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, সাবের আহম্মেদ, মেহেদী হাসান, শিহাব শাহরিয়ার, সাখাওয়াত হোসেন ও আমিনুল এহসান, আজিজুল করিম ও মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ।

ছেলে জামিন না পাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদের মা।

এদিন দুই দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার দুই তদন্তকারী কর্মকর্তা। জামিন শুনানির সময় আসামিদের অভিভাবকরা আদালতে ভিড় করেন।

শুনানির সময় আসামিদের আদালতে উপস্থিত করা হয়নি। শুনানি শেষে বিকালে আসামিদের প্রিজনভ্যানে করে আদালতের হাজতখানা থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রিজনভ্যানে আসামিদের দেখে তাদের আত্মীয়স্বজন অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আসামিপক্ষে ঢাকার বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান হওলাদার, একেএম মহিউদ্দিন ফারুক, কামরুদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী আসামিদের জামিন আবেদন করেন।

আদালত দুই আসামি তারিকুল ইসলাম ও রেদোয়ান আহমেদের জামিন শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেন। এছাড়া আসামি মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ অসুস্থ থাকায় তাকে কারাবিধি অনুসারে চিকিৎসা দেয়ার আদেশ দেন আদালত।

sentbe-adআসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন শুনানিতে বলেন, আসামিরা সবাই ছাত্র হলেও এজাহারে তা উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আমরা কেউ সমাজের বাইরে নই। আপনিও (বিচারক) জানেন তাদের সঙ্গে কী হয়েছে। ঘটনার দিন যারা মার খেল আর তারাই আসামি হলো। বাংলাদেশের মানুষ সবাই জানে ছাত্রদের কোনো অপরাধ নেই। জামিন না পেলে তাদের শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যে কোনো শর্তে আসামিদের জামিনের প্রার্থনা করেন আইনজীবীরা। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মো. আবু হানিফ।

জামিন বাতিল শুনানিতে তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা পুলিশের ওপর হামলার কথা স্বীকার করেছে। ছাত্ররা ছাত্রদের মতো করে চলবে। কিন্তু তারা সবাই সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লিপ্ত। সরকারকে উৎখাতের জন্য তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। ছাত্ররা রাস্তায় নামতেই পারে, আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু তারা কী ধরনের আন্দোলন করেছে, তা সবাই দেখেছে।

আবু হানিফ বলেন, পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কেউই তাদের থামাতে পারেনি। যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করেছে তারা কী ধরনের ছাত্র? জামিন পেলে আসামিরা আরও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে জড়িত হবে। তদন্তের স্বার্থে তাদেরও আবারও রিমান্ডে নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর ওই আদেশ দেন।

এর আগে মঙ্গলবার আসামিদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আসামিরা সবাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্ট, নর্থ সাউথ, সাউথইস্ট ও ব্র্যাকের ছাত্র। বাড্ডা থানায় দায়ের করা মামলাটি এসআই জুলহাস মিয়া মামলাটি তদন্ত করছেন। আর ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলাটি এসআই হাসান মাসুদ মামলাটি তদন্ত করছেন।