
রাজধানীর জিগাতলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি নারী হোস্টেল থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেত্রী জান্নাতারা রুমীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড- তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।
রুমীর রাজনৈতিক ভূমিকাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন আরও জোরদার হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী প্ল্যাটফর্মে সোচ্চার হওয়ায় তিনি গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন হুমকি ও সাইবার বুলিংয়ের শিকার ছিলেন বলে জানায় এনসিপি। দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তিনি অনলাইনে হত্যার পাশাপাশি ধর্ষণের হুমকিও পেয়েছিলেন।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, প্রায় দুই মাস ধরে নানা ধরনের অনলাইন হামলা সহ্য করে ভেঙে পড়েন রুমী। রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাঁর আচরণে দেখা গিয়েছিল হতাশার ছাপ। স্বজন এবং সহকর্মীরাও জানান, মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা তাঁকে গ্রাস করেছিল।
এদিকে রুমীর পরিবার থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, দুই দফা বিবাহবিচ্ছেদ, সন্তানদের কাছে না পাওয়া এবং আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। চিকিৎসাও নিচ্ছিলেন নিয়মিত।
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে বিষণ্নতার বিষয়টি উল্লেখ করে অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সাইবার বুলিং বা হুমকির বিষয়ে পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হয়নি। তবে তদন্তের স্বার্থে রুমীর মোবাইল জব্দ করা হয়েছে, ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী তথ্য জানা যাবে।
রুমীর লাশের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। নওগাঁর পত্নীতলায় জন্ম নেওয়া জান্নাতারা রুমী ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নার্সিংয়ে পড়াশোনা শেষ করে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি বেকার ছিলেন এবং জিগাতলায় ওই হোস্টেলে থাকতেন।
পরিবারের সদস্যরা রুমীর মৃত্যু নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, ব্যক্তিগত সংকট এবং ডিজিটাল হয়রানির অভিযোগ- সবকিছু মিলিয়ে রুমীর মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন রহস্য। পুলিশ বলছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর ধরন নিয়ে চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।




































