Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

হাসপাতালে রোগী নেই, বেডে ঘুমায় বিড়াল

hospitalনেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ কর্মরত চিকিৎসকরা অনুপস্থিত থাকায় কমে গেছে রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসা না পাওয়ায় উপজেলার এ হাসপাতালে যান না রোগীরা।

উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও নার্সরা মিলে কোনোরকম চালাচ্ছেন চিকিৎসাসেবার কাজ। একেবারে নিরুপায় হয়ে যে কজন রোগী হাসপাতালে যান তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এছাড়া হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। বজায় নেই হাসপাতালে রোগীদের অবস্থান করার মতো পরিবেশও।

chardike-ad

শনিবার দুপুরে হাসপাতালটিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ শয্যার হাসপাতালে রোগী আছেন মাত্র পাঁচজন। রোগীর বেডে ঘুমাচ্ছে বিড়াল। বেডগুলো এলোমেলো। বেডে বিছানো কাপড়গুলো অপরিষ্কার, ময়লা ও রক্তমাখা।

হাসপাতাল প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ কোনো ডাক্তারকে পাওয়া যায়নি। তবে ঘণ্টাখানেক পরে জরুরি বিভাগের ডা. আলী মোহাম্মদ হোসাইন নামে একজন মেডিকেল অফিসারকে দেখা যায়। এ সময় কথা হয় হাসপাতালে ভর্তি পাঁচ রোগীর সঙ্গে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা নূর মিয়া জানান, অ্যাজমা রোগের চিকিৎসা নিতে বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে আছি। হাসপাতালের পরিবেশটা একদম ভালো না। খাবারের মানও খারাপ। বিশেষ করে রাতে কুকুর-বিড়ালের জন্য ঘুমানো যায় না।

একই রকম অভিযোগ করেন, হাসপাতালে ভর্তি অন্য চার রোগী আদমপুর গ্রামের সাবেক পৌর কাউন্সিলর অঞ্জন সরকার, একই গ্রামের মালেকা আক্তার, দুঃখিয়ারগাতী গ্রামের ঝুটন মিয়া ও চারিতলা গ্রামের কামরুন্নাহার।

sentbe-adহাসপাতালে দায়িত্বরত নার্স জাকিয়া আক্তার ও রিনা আক্তারের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, আমরা যতক্ষণ দায়িত্বে থাকি, তখন কুকুর-বিড়াল প্রবেশ করলে তাড়িয়ে দেই। তবুও সুযোগ পেলেই কুকুর-বিড়াল ঢুকে পড়ে।

এছাড়া হাসপাতালে যারা খাবার পরিবেশন করেন, তারা নিয়ম মেনে রোগীদের খাবার দেন না। সপ্তাহে ২-৩ দিন কাপড় ধোলাইয়ের নিয়ম থাকলেও যারা কাপড় ধোলাইয়ের দায়িত্বে আছেন তারা ১৫ দিনেও একবার কাপড় ধোলাই করেন না। যে কারণে রোগীদের বিছানার চাদরগুলো ময়লা মাখা থাকে।

হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ, আব্দুল জাহেদ ও সুকুমার সূত্রধর জানান, হাসপাতালটিতে ২৫-৩০ জন ডাক্তার আছেন। কিন্তু একজনও হাসপাতালে আসেন না। ডাক্তার না থাকায় সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালে একজন বিশেষজ্ঞ দাঁতের ডাক্তার থাকলেও রোগীরা সারা বছরেও তার দেখা পান না।

হাসপাতালে না পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জিন্নাত সাবাহর সঙ্গে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খাবার পরিবেশ এবং কাপড় ধোলাইয়ের কাজটি যারা করেন তারা স্থানীয় লোক। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় অন্য বিষয়ে জানতে চাওয়ার আগেই তিনি মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনার সিভিল সার্জন ডা. তাজুল ইসলাম খান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ