Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দেশে খাবার জোটে না, স্বপ্ন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া

uk‘স্বপ্ন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া। কারণ, আমাদের সন্তানদের একটি উন্নত ভবিষ্যৎ দিতে চাই। এখানে (হন্ডুরাসে) আমরা কোন কাজ পাই না। খুব কষ্টে জীবন-যাপন করতে হয়। ঠিকমতো খাবার জোটে না। স্থানীয় একটি সংবাদপত্র এল হেরাল্ডোকে এভাবেই বলছিলেন এক শরণার্থী।

যদিও মধ্য আমেরিকান দেশগুলো থেকে অনেক দিন ধরেই অনেক মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে যাবার চেষ্টা করেছে, কিন্তু এভাবে সংগঠিত অভিবাসী স্রোতের ব্যাপারটা একেবারেই নতুন।

chardike-ad

দক্ষিণ আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখী হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী মেক্সিকো সীমান্তে আটকা পড়েছে। ফলে এসব শরণার্থীদের রাত কাটছে খোলা আকাশের নিচে। এসব শরণার্থীা ভোগ করছেন সীমাহীন কষ্ট।

জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই কাফেলায় অন্তত সাত হাজার মানুষ যোগ দিয়েছে। তবে গ্রুপটি কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে গেছে, ফলে অভিবাসীদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন।

কিছু অভিবাসীর মধ্যেই মেক্সিকোর টাপাচুলা শহরে পৌঁছে গেছে, তবে বেশিরভাগই এখনো গুয়াতেমালা-মেক্সিকো সীমান্তে আটকে রয়েছেন। নতুন করে আরো ১ হাজার হন্ডুরাসের অভিবাসীর যাত্রা শুরুর কথা জানা গেছে। অন্যদিকে ৩ হাজারের বেশি অভিবাসী আবার হন্ডুরাসে ফিরে গেছে।

এই মানব স্রোতে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। উষ্ণ আবহাওয়া মানে তাদের সূর্যের তাপে পোড়া আর পানিশূন্যতার ঝুঁকিতে পড়তে হয়েছে। অনেক অভিবাসী ছাড়া আর কাগজের টুকরো দিয়ে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করেছেন।

টানা ছয়দিন ধরে হাঁটার পরে অনেকের অচেতন হয়ে পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। অভিবাসীরা সড়কের পাশে বা অস্থায়ী ঘরে ঘুমাচ্ছেন যেখানে পরিষ্কার পানি বা পয়ঃনিষ্কাষনেরও অভাব রয়েছে।

খাবারেরও যোগান স্বল্প। অতিক্রম করার সময় স্থানীয় লোকজন এই কনভয়কে কিছু কিছু খাবার দিচ্ছেন বলে জানা যায়। গুয়াতেমালা এবং মেক্সিকোর যে সীমান্তে কর্মকর্তারা অভিবাসীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করেন, সেখানে দীর্ঘ সময় তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে অভিবাসীদের সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে।

কোন কোন অভিবাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়েছে আর পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে, যাতে অনেকে আহত হয়েছেন। নিজ দেশের সহিংসতা থেকে বাঁচার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এসে আশ্রয় প্রার্থনা করেন, তার আশ্রয়ের আবেদন শোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্স গত জুন মাসে বলেছেন, ভীতির কারণে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়ের আইনের অতীতে অনেক অপব্যবহার হয়েছে। আর তাই নিজ দেশে সহিংসতা আর অপরাধ চক্রের বিষয় আর আশ্রয়ের জন্য কোন যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে না।

কিন্তু এই নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে এখন একটি মামলা চলছে, যেখানে একটি সংস্থা অভিযোগ করেছে যে অভিবাসন কর্মকর্তারা অবৈধভাবে শরণার্থী প্রক্রিয়ার বিষয়গুলোয় সময়ক্ষেপণ করছেন।

নিজ দেশ ছেড়ে অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ‘অবৈধভাবে’ আসতে দেয়ার অভিযোগ তুলে সোমবার তিনি মধ্য আমেরিকান কয়েকটি দেশের সমালোচনা করেছেন।

এদিকে, অভিবাসন প্রত্যাশীদের এই স্রোত ঠেকানোর চেষ্টা করায় শুক্রবার মেক্সিকোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে, ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, যেসব দেশ অভিবাসীদের ঢল যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেবে তাদের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ এবং ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করে দেয়া হবে। প্রয়োজন হলে সীমান্তে সেনা পাঠানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। অভিবাসন প্রত্যাশীদের অধিকাংশই হন্ডুরাস থেকে আসা।