Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

রাজশাহীতে যুবলীগ নেতার কাণ্ড!

rajshahi-juboleage

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা এবং আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর আগেই নৌকা ‘দখল’ করেছেন এক যুবলীগ নেতা। নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে তিনি এলাকায় পোস্টার সাঁটিয়েছেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের এ ধরনের কাণ্ডে খোদ দলের ভেতরেই শুরু হয়েছে সমালোচনা।

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ১০ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে। প্রথম ধাপে ৮৭টি উপজেলায় ভোট হবে। রোববার ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে রাজশাহীর সব উপজেলায় ভোট হবে। নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১১ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। আর প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৬ ফেব্রুয়ারি। ভোটগ্রহণ হবে ১০ মার্চ।

chardike-ad

কিন্তু বিধিভঙ্গ করে গোদাগাড়ী উপজেলার দুটি পৌরসভা এবং ৯টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের পোস্টার শোভা পাচ্ছে। ওই পোস্টারে নিজের ছবির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং দলীয় প্রতীক নৌকাজুড়ে দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দোয়া চেয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম।

পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বচ্ছ গোদাগাড়ী উপজেলা বিনির্মাণে জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যান পদে আপনাদের (ভোটারের) দোয়া প্রার্থী। নৌকায় ভোট দিন, বদলে দাও গোদাগাড়ী।’ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জাহাঙ্গীর আলম নিজেই ‘বিতর্কিত’। পোস্টারে তার গোদাগাড়ী বদলে দেয়ার স্লোগান রীতিমতো এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর আস্থাভাজন। তবে যুবলীগের এই নেতাকে নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। এর মধ্যে গত এক দশকে তিনি এই উপজেলায় সরকারিভাবে ধান ও চাল ক্রয় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। তার এই সিন্ডিকেটের কারণে স্থানীয় কৃষকরা সরাসরি খাদ্যগুদামে ধান দিতে পারেননি।

এমনকি সরকারের ১০ টাকা কেজির চাল ডিলারদের কাছ থেকে পাইকারিতে কিনেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। এলাকার বিভিন্ন বালুমহালেও রয়েছে তার খবরদারি। এসবের মাধ্যমে ফুলেফেঁপে উঠেছেন যুবলীগের এই নেতা।

এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ জন্য বেশ কিছুদিন ধরে ব্যানার-ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রচারণা চালালেও এখন তিনি নৌকা দখল করে ফেলেছেন।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, জাহাঙ্গীর আলমকে প্রার্থী করা হলে এখানে নৌকার ভরাডুবি নিশ্চিত। কিন্তু তিনিই আগেভাগে নৌকা ‘দখল’ করে প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় দলের ভেতরে-বাইরে সমালোচনা হচ্ছে। এ কারণে আমরা বিব্রত।

জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পোস্টারে লেখা আছে চেয়ারম্যান পদে জাহাঙ্গীর আলম দোয়া প্রার্থী। নৌকায় ভোট দিন। অর্থাৎ নৌকা যে পাবে তাকেই সেই প্রতীকে ভোট দিন। পোস্টারে বলা নেই যে, জাহাঙ্গীর আলমকে নৌকায় ভোট দিন। তাই এ নিয়ে বিতর্ক করার কিছু নেই।’

খাদ্যগুদাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার রাইস মিল, চাতাল আছে। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে যতটুকু ধান-চাল দিতে পারি ততটুকুই দিয়েছি। এর বাইরে খাদ্যগুদামের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমার বিরুদ্ধে যারা এসব কথা ছড়াচ্ছে তারাই এসবের সঙ্গে জড়িত।’

জাহাঙ্গীর আলমের নৌকা প্রতীক নিয়ে এ ধরনের প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম এখনও প্রার্থীই নন। তাই প্রতীক নিয়ে তিনি এমন প্রচারণা চালাতে পারেন না। এ বিষয়ে আমরা বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’

সৌজন্যে- যুগান্তর