Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সুইডেনের পার্লামেন্টে প্রথম হিজাব পরা এমপি লায়লা

Leila-Aliদুই বছর বয়সে যুদ্ধকবলিত আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া থেকে বাবা-মায়ের সাথে পালিয়ে সুইডেন গিয়েছিলেন লায়লা আলী এলমি। এখন তিনি উত্তর ইউরোপের দেশটির পার্লামেন্ট সদস্য। সুইডেনের পার্লামেন্টে তিনিই প্রথম হিজাব পরা এমপি। সোমালী বংশোদ্ভূতদের মধ্যেও প্রথম লায়লা।

৩১ বছর বয়সী লায়লা দেশটির বিরোধীদল প্রগতিশীল গ্রিন পার্টি থেকে গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়েছে গোথেনবার্গ শহরের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার আসন থেকে। অভিবাসী প্রধান এলাকাটি অনুন্নত। বেকারত্বের হার বেশি, শিক্ষার নিম্নমান, গৃহায়ন সমস্যাসহ এলাকাটির রয়েছে অনেক সমস্যা।

chardike-ad

রাজনীতিতে জড়িত হওয়ার পর থেকেই অভিবাসীদের সমস্যা ও বেকারত্ব নিরসন নিয়ে স্থানীয় শ্রমিক কমিটির সাথে কাজ করেন লায়লা। লায়লা বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি আমি। চাকুরিতে সব ধর্ম-বর্ণের লোকদের সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার নিয়েও কাজ করি। নারীদের বিশেষ করে অভিবাসী নারীদের জনসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি আমি’।

২০১৫ সালে অভিবাসন নীতি পরিবর্তন করে সুইডেন এক লাখ ৬০ হাজার শরনার্থীকে আশ্রয় দেয়। তবে এরপরই দেশটিতে অভিবাসন বিরোধীতা ও ডানপন্থার উত্থান হয় ব্যাপকভাবে। গত বছরের শেষের দিকেও প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লফভেন বলেছেন, অভিবাসী আশ্রয় দেয়া বন্ধ করা উচিত।

গৃহযুদ্ধ, দারিদ্রতা ও পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের কারণে ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক দেশ থেকে ২০১৫ সালে ইউরোপমুখী যে শরণার্থীর ঢল নামে- তার কারণে ইউরোপের অনেক দেশে ডানপন্থী মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এসব দলগুলো অভিবাসী বিশেষ করে মুসলিম বিরোধী অবস্থান নেয়। বর্ণবাদ ও ইসলামভীতি বেড়ে যায় আগের চেয়ে অনেকগুণ।

সুইডেনের সমাজ ব্যবস্থায় বর্ণবাদ রয়েছে ব্যাপক- বিশেষ করে অভিবাসীদের বিষয়ে। এই বৈষম্য দূর করতে কাজ করেন লায়লা আলী এলমি। তিনি মনে করেন, বর্ণবাদ কাঠামোগত ভিত্তি পাওয়ার কারণেই সুইডেনে বৈষম্য তৈরি করেছে। অভিবাসীরা সুইডিশ সমাজ ব্যবস্থার সাথে একাত্ত হতে পারছে না- এমন অভিযোগ নাকচ করে দেন।

এমপি হওয়ার আগে লায়লা স্থানীয় সিভিল সোসাইটির সাথে বেকারত্ব নিরসনসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠির উন্নয়নে কাজ করেছেন। তবে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কাজের জন্য তাকে অনেক বিরোধীতার মুখোমুখী হতে হচ্ছে।

লায়লা বলেন, উগ্রবাদী ও বর্ণবাদীদের জন্য ঘৃনার প্রতীক হয়ে উঠছি আমি। তারা যেমন সুইডিশ সমাজ চায়- তার জন্য আমাকে হুমকি মনে করে। তবে অন্যদের জন্য আমি আশার প্রতীক, কারণ আমি পিছিয়ে পড়া লোকদের প্রতিনিধিত্ব করছি। তরুণদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তৈরি করা, তাদের রাজনীতিবীদ হয়ে উঠতে উৎসাহ দেই আমি। এটি যে শুধুমাত্র তারা কালো, মুসলিম, অভিবাসী বা অন্য কোন পিছিয়ে পড়া সম্প্রদারে সে জন্য নয়।

লায়লার সাফলে অভিবাসীরাও উজ্জীবীত হচ্ছে। এনি হুসেইন নামের এক অভিবাসী শিক্ষার্থী বলেন, যখন আমরা দেখি এক সোমালীয় বংশোদ্ভুত নারী পার্লামেন্টে দাড়িয়ে আমাদের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছে, তখন তাকেই তো ভোট দেয়া উচিত। এখানে ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় থাকলেও তার নির্বাচিত হওয়া মানে আমরাও যে কিছু করতে পারি সেটি প্রমাণিত হওয়া।

সৌজন্যে- দিগন্ত