টেস্ট ক্রিকেটের রোমাঞ্চ হয়তো একেই বলে! যেখানে সকালের সূর্য সবসময় আপনাকে সারাদিনের বার্তা দেবে না। যেমনটা দেয়নি ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকেও। বার্মিংহামে ঘরের মাঠের অ্যাশেজ সিরিজের শুরুটা দুর্দান্ত করেও শেষতক ফলটা নিজেদের পক্ষে রাখতে পারেনি স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে অসহায় অবস্থায় ছিলো অস্ট্রেলিয়া, সুবিধাজনক লিড নিয়েছিল ইংল্যান্ড। অথচ দ্বিতীয় ইনিংসেই বদলে গেল ম্যাচের চিত্রনাট্য। স্টিভেন স্মিথের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্য এবং নাথান লিয়নের স্পিন বিষের নীল হয়ে ২৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে ইংল্যান্ড।
সোমবার ম্যাচের পঞ্চম তথা শেষদিন ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ৩৮৫ রান, হাতে ছিল ১০ উইকেট। শেষদিনের উইকেটে ৩৮৫ রান পাহাড়সম লক্ষ্য, তাই ড্রয়ের দিকে এগুনোই ছিলো ইংল্যান্ডের প্রাথমিক পরিকল্পনা। কিন্তু তা কাজে লাগেনি। লিয়নের স্পিনে কুপোকাত হয়ে মাত্র ১৩৬ রানেই গুটিয়ে গেছে স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংস।
ইংল্যান্ডের মাটিতে হওয়া সবশেষ অ্যাশেজ সিরিজটি ২-৩ ব্যবধানে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে তারা ইনিংস ও ৪৬ রানের ব্যবধানে জিতেছিল ওভালের মাঠের শেষ ম্যাচটি। সে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে প্রায় ১৮ বছর পর বার্মিংহামে জয়ের দেখা পেলো সফরকারীরা।
জিততে হলে করতে হবে অসাধ্য সাধন। শেষদিনের নির্ধারিত ৯০ ওভারে ৩৮৫ রান হবে কি-না সেটি পরের প্রশ্ন, আগে তো ৯০ ওভার খেলতে হবে? এ কাজটিই করতে পারেনি স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। দিনের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ররি বার্নস। এর আগে অবশ্য ইতিহাসের দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক ম্যাচের পাঁচদিনই ব্যাটিং করার বিরল কীর্তিতে নাম লিখিয়ে ফেলেন বার্নস।
প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ ছিলেন আরেক ওপেনার জেসন রয়। তিনি চেষ্টা করেন এ ইনিংসে ভালো করার। অধিনায়ক জো রুটের সঙ্গে এগুচ্ছিলেন ভালোভাবেই। কিন্তু লিয়নের বিপক্ষে অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান রয়। আউট হওয়ার আগে ৫৮ বল খেলে করেন ২৮ রান। তার চেয়ে এক বল কম খেলে সমান ২৮ রানে থামেন অধিনায়ক রুটও।
মাঝে মাত্র ১ রান করে ফেরেন জো ডেনলি। ৮০ রানের মাথায় তিনি ফেরার পরই যেনো মোড়ক লেগে যায় ইংলিশদের ইনিংস। চোখের পলকে ২ উইকেটে ৮০ থেকে ৭ উইকেটে ৯৭ রানের দলে পরিণত হয় তারা। জস বাটলার (১), বেন স্টোকস (৬) ও জনি বেয়ারস্টো (৬) কিছুই করতে পারেননি।
নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন ক্রিস ওকস। যা শুধু অস্ট্রেলিয়ার জয়টাই বিলম্বিত করে।
বল হাতে ক্যারিয়ারের ১৫তম বারের মতো ফাইফার নেন লিয়ন। মাত্র ৪৯ রান খরচায় ৬ উইকেট শিকার করে ইংলিশদের গুটিয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তিনি। বাকি ৪ উইকেট নেন ডানহাতি পেসার প্যাট কামিনস।