
টেস্টে জয়, ওয়ানডেতে স্মরণীয় মুহূর্ত এবং টি-টোয়েন্টিতে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে পৌঁছানোর কীর্তি—এসব থাকলেও শ্রীলঙ্কার মাটিতে এখন পর্যন্ত কোনো পূর্ণাঙ্গ সিরিজ জেতা হয়নি টাইগারদের। অবশেষে সেই অপূর্ণতাও ঘুচল। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষটিতে তানজিদ হাসান তামিমের দুর্দান্ত ফিফটির সুবাদে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অঘোষিত ফাইনাল ম্যাচে ১৩৩ রানের লক্ষ্য ২১ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে লিটন কুমার দাসের দল। এই জয়ের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথমবারের মতো কোনো ফরম্যাটে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে পাওয়ার প্লেতেই পিছিয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। পাঁচ ওভারে তিন উইকেট হারায় তারা। প্রথম ওভারে কুসাল মেন্ডিসকে ফেরান শরিফুল ইসলাম।
পরের ওভারে কুসাল পেরেরাকে আউট করেন মেহেদি। প্রান্ত বদলে পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এসে দিনেশ চান্দিমালের উইকেট নেন ৩০ বছর বয়সী অফস্পিনার। অষ্টম ওভারে চারিথ আসালাঙ্কাকে বোল্ড করেন মেহেদি। তার শেষ ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৩৯ বলে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করা পাথুম নিসাঙ্কা।
পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করে বেশি দূর যেতে পারেননি কামিন্দু মেন্ডিস। ১টি করে চার-ছক্কায় ১৫ বলে ২১ রান করে আউট হন তিনি।
শেষ ওভারে শরিফুলের বলে ঝড় তোলেন দাসুন শানাকা। ২টি করে চার-ছক্কায় নেন ২২ রান। সব মিলিয়ে ২৫ বলে ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলকে লড়াইয়ে পুঁজি এনে দেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদি। মেহেদির মতোই কিপটে বোলিং করেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে ১৭ রানে ১ উইকেট নেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি পেসার। ১ উইকেটের জন্য ৪ ওভারে শরিফুলের খরচ ৫০ রান। বাকিরা ১৬ ওভারে দেন মাত্র ৮২ রান।
১৩৩ রানের লক্ষে খেলতে নেমে প্রথম বলেই পারভেজ হোসেনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরের ওভারে রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান লিটন। পরে তানজিদের সঙ্গে গড়েন ৫০ বলে ৭৪ রানের জুটি। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল এই জুটিতেই জিতে যাবে বাংলাদেশ। নবম ওভারে কামিন্দুর বলে বড় শটের খোঁজে ক্যাচ আউট হন ২৬ বলে ৩২ রান করা লিটন।
লিটোন আউট হলেও ২৭ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি পূর্ণ করেন তানজিদ। হৃদয়ের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে তিনি যোগ করেন ৪৮ বলে ৫৯ রান। ১টি করে চার-ছক্কায় ২৫ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৩২/৭ (নিসাঙ্কা ৪৬, কুসাল মেন্ডিস ৬, কুসাল পেরেরা ০, চান্দিমাল ৪, আসালাঙ্কা ৩, কামিন্দু মেন্ডিস ২১, শানাকা ৩৫, ভ্যান্ডারসে ৭, থিকশানা ৬; শরিফুল ৪-০-৫০-১, মেহেদি ৪-১-১১-৪, মুস্তাফিজ ৪-০-১৭-১, তানজিম ২-০-২৩-০, শামীম ২-০-১০-১, রিশাদ ৪-০-২০-০)
বাংলাদেশ: ১৬.৩ ওভারে ১৩৩/২ (পারভেজ ০, তানজিদ ৭৩*, লিটন ৩২, হৃদয় ২৭*; থুসারা ৩-০-২৫-১, বিনুরা ২-০-১১-০, থিকশানা ৩.৩-০-৩০-০, আসালাঙ্কা ১-০-১৬-০, ভ্যান্ডারসে ৪-০-২৯-০, কামিন্দু ৩-০-২১-১)
ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: শেখ মেহেদি হাসান
ম্যান অব দা সিরিজ: লিটন কুমার দাস





































