Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

হামলার স্মৃতিচারণে যা বললেন অভিজিতের স্ত্রী

ovijitআততায়ীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদ সংবাদমাধ্যম বিবিসির কাছে স্মৃতিচারণ করেছেন। ধর্মনেরপেক্ষতা ও বিজ্ঞানের উন্নতির কারণে তার স্বামী প্রাণ হারালেও এর পক্ষে সোচ্চার থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।

২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্বদ্যালয়ের টিএসটির সামনে লেখক ও ব্লগার অভিজিতকে কুপিয়ে জখম করে অজ্ঞাত হামলাকারী। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ওই হামলায় তার স্ত্রী রাফিদাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়েছে।

chardike-ad

ওই হামলার ঘটনার পর নিরাপদ স্থান থেকে বিবিসির সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ হত্যার সেই দিনটির স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন,‘ বাংলাদেশে মৌলবাদ অনেক গভীরে শিকড় গেড়েছে। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন তিনি।’

মারাত্মক জখম হওয়া রাফিদা বলেন, ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। ভয়াবহ ওই হামলার কিছু ঘটনা তার স্মৃতিতে রয়েছে বলে জানান তিনি।

ওই হামলার আগ মুহূর্তের ঘটনা প্রসঙ্গে রাফিদা বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ফিরছিলাম। আমরা একে অন্যের হাত ধরে হাঁটছিলাম এবং কথা বলছিলাম। আমাকে গাড়িতে তোলা অবস্থায় এবং কেউ আমাকে নিয়ে যাওয়ার আগের আর কোনো কিছু মনে করতে পারছি না আমি। তবে আমার মনে আছে, রক্তে আমার পুরো শরীর ভিজে গিয়েছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘হামলার পর যখন আমি হাসপাতালে ছিলাম তখন জানতে পারলাম, মাথায় আঘাত করা হয়েছে। হাতও মারাত্মকভাবে জখম করা হয়েছে। একটি আঙুলও আমি হারিয়েছি।’

হাসপাতালের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অভিজিৎকে আমার পাশেই শোয়ানো ছিল। চিকিৎসকরা এসে আমাকে বললেন, তার (অভিজিৎ) আগে চিকিৎসা দিতে হবে। কারণ আমার অবস্থা তার চেয়ে ভালো। অভিজিৎ শব্দ করছিল। কিন্তু তার জ্ঞান ছিল না।’

স্বামী অভিজিৎকে ‘বুদ্ধিবৃত্তিক একজন নাস্তিক’ উল্লেখ করে রাফিদা বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বিজ্ঞানের প্রচারে অভিজৎ জীবন উৎসর্গ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমি কথা বলেই যাব। আমরা যা বিশ্বাস করি তার প্রকাশ করতেই থাকব। এই কারণেই তো অভিজিৎকে মরতে হলো। তবে আমি হাল ছাড়ব না।’

এর আগে অভিজিৎয়ের পরিবার জানিয়েছিল, মুক্তমনা ব্লগে ধর্মনিরপেক্ষতা, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতেন অভিজিৎ। এ কারণে তাকে প্রায়শ হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ফেসবুকেও চিন্তা-চেতনা নিয়ে লিখতেন অভিজিৎ।

হত্যার হুমকিকে তারা কতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখতেন- এমন প্রশ্নে রাফিদা বলেন, হত্যার হুমকি মূলত ছিল ফারাবি নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে ‘ব্লক’করার কথাও জানান রাফিদা।

তিনি বলেন, এধরনের হুমকি অনেক বুদ্ধিজীবী ও লেখককেই দেওয়া হয়েছে- যার দু-একটিই এ পর্যন্ত কার্যকর করা হয়েছে। হত্যার হুমকি নিয়ে বাংলাদেশে এসে নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভেবেছিলেন বলে উল্লেখ করেন অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী।

কিন্তু বই মেলা থেকে টিএসসির মোড় পর্যন্ত এইটুকু রাস্তায় এত মানুষের মধ্যে এ রকম একটি হামলা হতে পারে বলে এটি তাদের কল্পনার বাইরে ছিল বলেই জানান রাফিদা।

এ ঘটনার ‘প্রধান সন্দেহভাজন’ বলে কথিত শফিউর রহমান ফারাবি নামে এক ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি।