Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মুরসির মৃত্যু হত্যাকাণ্ড : ব্রাদারহুড

mursiমিশরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করেছে তার সংগঠন ইখওয়ানুল মুসলিমিন বা মুসলিম ব্রাদারহুড। দখলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মোহাম্মাদ মুরসিকে ক্রমান্বয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার ও পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর পর মুরসির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে এবং এরই ধারাবাহিকতায় তার মৃত্যু হলো।

গতকাল সোমবার মিশরের আদালতের মধ্যে তিনি মারা যান। মোহাম্মদ মুরসি ইসলামপন্থী দল ইখওয়ানুল মুসলিমিন বা মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রথম সারির নেতা ছিলেন। ২০১২ সালে ইখওয়ানের প্রার্থী হিসেবে তিনি জনগণের ভোটের মধ্য দিয়ে মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পান।

chardike-ad

এর আগে বিভিন্ন মহল থেকে জানানো হয়েছিল, কারাগারে মুরসির শারীরিক অবস্থা মোটেও ভালো নয়, কারাগারে তার মৃত্যুও হতে পারে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত মুরসিকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে না বলে পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছিল।

ব্রিটিশ রাজনীতিক ও আইনজীবীদের একটি প্যানেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলার ফলে মুরসির শারীরিক অবস্থা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে তিনি অকালে মারা যেতে পারেন। এসব বক্তব্যকে মোটেও গুরুত্ব দেয়নি মিশরের বর্তমান সরকার।

দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক হোসনি মোবারক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ২০১১ সালে মিশরের ইতিহাসে অনুষ্ঠিত প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন মুরসি। কিন্তু তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাপ্রধান আব্দুল ফাত্তাহ আস-সিসি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেন। ওই অভ্যুত্থানে সমর্থন দেয় সৌদি আরব, ইসরায়েলের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলো। সরকারিভাবে বিবৃতি দিয়ে মুরসি সমর্থকদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সৌদি আরব।

ক্ষমতা দখলের পর মুরসি সমর্থকদের ওপর ব্যাপক তাণ্ডব চালায় সেনাবাহিনী। বেসরকারি হিসেবে সে সময় সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহত হন সহস্রাধিক মুরসি সমর্থক। কারাগারে পাঠানো হয় মুরসিকে। ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করা হয়। গ্রেফতার করা হয় কয়েক হাজার মুরসি সমর্থককে। মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ব্রাদারহুড প্রধানসহ দলটির ৯ শতাধিক নেতাকর্মীকে।

মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ব্রাদারহুড নেতা মোহাম্মদ বদিসহ দলটির প্রায় সব শীর্ষস্থানীয় নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। সহিংসতা, জেল ভাঙা, নাশকতা, রাষ্ট্রদ্রোহসহ নানা অভিযোগের মামলায় বিচার চলতে থাকে তাদের। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, দেশটিতে প্রায় ৬০ হাজার রাজনৈতিক কর্মী আটক রয়েছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব বিচারকে রাজনৈতিক আখ্যা দিলেও তাতে কর্ণপাত করেনি দেশটির সামরিক জান্তা।