সিউল, ২ মে ২০১৪:
মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করছিল উৎফুল্ল এক শিক্ষার্থী। অন্য বন্ধুরাও সঙ্গে আনন্দে মাতোয়ারা!‘মনে হচ্ছে টাইটানিকে উঠেছি’ এমনি উক্তি এক বন্ধুর। ‘আমাকে উদ্ধার কর।’- হাস্যোচ্ছলে বলে ওঠে আরেক বন্ধু।
পাশ থেকে অন্য বন্ধু হঠাৎ করেই বলে ওঠে ‘মুঠো ফোন কাজ করছে না! ভিডিওটি যদি ফেস বুকে দেয়া যেত।’ এমনি উৎফুল্ল আলাপচারিতা চলতে চলতেই ফেরিটি একদিকে কাত হয়ে যায়। পার্ক সু হেইনা নামে এক শিক্ষার্থীর লাশের পাশে পড়ে থাকা মুঠো ফোনটি এমন নিষ্ঠুর সত্যকে ধারণ করে রেখেছে। মুঠোফোনটি কুড়িয়ে পেয়ে ভিডিও দেখার পর পার্কের বাবা সেটি দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্টগার্ডের হাতে তুলে দেন। পরে ফুটেজটি দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করা হয়।
১৬ এপ্রিল সকাল আটটা ৫২ মিনিটের দিকে ভিডিও ধারন করে পার্ক। যার কিছুক্ষণ পরই ফেরিটি বিপদের মুখে পড়ে। ‘মনে হচ্ছে এখনি আমার শেষ কথা বলার সময়।’ কিছু বুঝে না উঠলেও অজানা আশংকায় মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে আরেক বন্ধুর।
যাত্রীদের লাউড স্পিকারে নিজ নিজ জায়গায় থাকার পরামর্শ দেওয়া হলে সবাই আতঙ্কে এদিক-ওদিক ছুটতে থাকে। এক শিক্ষার্থী বলে ওঠে ‘ক্যাপ্টেন কোথায়? তিনি কী করছেন?’ প্রতিটি চিত্রই ফুটে উঠেছে পার্কের মুঠো ফোনের ভিডিও ফুটেজে।
‘যাত্রীদের হাতে থাকা লাইফ জ্যাকেট পরতে বলায় হতবাক হয়ে প্রশ্ন করে আরেক ছাত্র ‘লাইফ জ্যাকেট পরবো? তার মানে কি ফেরি ডুবে যাচ্ছে ?’ দক্ষিণ কোরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরির ৪৭৬ জন যাত্রীর মধ্যে ৩২৫ জনই ছিল একই স্কুলের শিক্ষার্থী। ছুটিতে তারা এক দ্বীপে বেড়াতে যাচ্ছিল। শুক্রবার সকালে সরকারি হিসাবে জানানো হয়, ফেরি ডুবিতে ২২৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিখোঁজ রয়েছে ৭৭ জন।