দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বৈরী সম্পর্ক উত্তর কোরিয়ার। প্রায়ই পাল্টাপাল্টি আচরণ করে দুটি দেশ। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করেছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি দেশটিকে শত্রু রাষ্ট্র ঘোষণা করেছে উত্তর কোরিয়া। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, কোরিয়ান পিপলস আর্মি উত্তর ও দক্ষিণকে পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ণ পৃথকীকরণের অংশ হিসেবে আন্তঃকোরিয়ান সীমান্তের পূর্ব এবং পশ্চিম অংশ বরাবর ৬০ মিটার দীর্ঘ সড়ক এবং রেলপথ ধ্বংস করেছে।
দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি একটি অনিবার্য এবং বৈধ ব্যবস্থা যা উত্তর কোরিয়ার সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে নেওয়া হয়েছে, যেখানে স্পষ্টভাবে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি প্রতিকূল রাষ্ট্র হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক উসকানির কারণে যুদ্ধের অপ্রত্যাশিত দ্বারপ্রান্তে দুদেশ এগিয়ে চলছে। ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের বরাতে কেসিএনএ জানিয়েছে, পিয়ংইয়ং কোনো বিশদ বিবরণ না দিয়ে সীমান্তকে আরও শক্তিশালী করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
এর আগে পিয়ংইয়ং গত সপ্তাহেই স্থল যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকি দিয়েছিল। তখন বলেছিল, দুই দেশকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেবে তারা। আন্ত-কোরিয়ান সহযোগিতার প্রতীক হিসেবে দেখা সড়ক ও রেলপথ কেটে দেওয়ার হুংকার ছিল পিয়ংইয়ংয়ের।
কোরিয়ান পিপলস আর্মি (কেপিএ) এই পদক্ষেপকে যুদ্ধ প্রতিরোধের জন্য একটি আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বর্ণনা করেছে। দাবি করেছে, এটি দক্ষিণ কোরিয়ায় যুদ্ধ অনুশীলন এবং এই অঞ্চলে আমেরিকান পারমাণবিক অস্ত্রের ঘন ঘন উপস্থিতির প্রতিক্রিয়া ছিল।
এটি এমন এক সময়ে ঘটল যখন দুই কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘শত্রুতা বৃদ্ধির’ ভয়ংকর আচরণ বলে চিহ্নিত করে উদ্বিগ্ন বিশ্লেষকরা।
এদিকে বিস্ফোরণের পর দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী সীমান্তের ওপারে গুলি ছোড়ে। কিন্তু এতে কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি স্বীকার করে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বিবৃতি দিয়ে বলেছে, উত্তর কোরিয়ার বাড়াবাড়ির জবাবে সিউলের সামরিক বাহিনী শক্তি প্রদর্শনে মিলিটারি ডিমার্কেশন লাইনের (এমডিএল) দক্ষিণ এলাকায় গুলি চালিয়েছে। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যে কোনো বেআইনি পদক্ষেপ মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়া প্রস্তুত বলেও জানানো হয়।