বুধবার । ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক আন্তর্জাতিক ১৩ মার্চ ২০২৫, ৩:৫৫ অপরাহ্ন
শেয়ার

পরমাণু ইস্যুতে বৈঠকে বসছে চীন-ইরান-রাশিয়া


পরমাণু ইস্যুতে বৈঠকে বসছে চীন-ইরান-রাশিয়া

 

 

সম্প্রতি, পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ইরানকে চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও, পরমাণু বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে অনাগ্রহ দেখিয়েছে ইরান। ট্রাম্পের চিঠির জবাবও একরকম কড়া ভাষায়ই দিয়েছে তারা। তবে, এবার সেই পরমাণু ইস্যুতেই চীন ও রাশিয়ার সাথে বেইজিংয়ে একটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ইরান। বেইজিংয়ের আয়োজনে এই বৈঠকটি আগামী ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এই সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ইরানের পরমাণু প্রকল্প ও কৌশলগত বিষয়গুলো নিয়ে চীন, রাশিয়া ও ইরান উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা করবে।

বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানান, বৈঠকে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা হবে। এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, বেইজিংয়ে আয়োজিত ওই বৈঠকে পারমাণবিক ইস্যুর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার বিষয়টির ওপর মনোযোগ দেওয়া হবে। বেইজিংয়ে চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মা ঝাওক্সুর পরিচালনায় বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই আলেক্সিভিচ রিয়াবকভ ও ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম ঘারিবাদি।

এদিকে, বুধবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানান, রাশিয়া ও তার সহযোগীরা ইরানের পারমাণবিক বিষয় নিয়ে একটি যৌথ বিস্তৃত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদে আমেরিকা যে পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল, রাশিয়া তা পুনরুদ্ধার করতে চায়। এদিকে, ইউরোপীয় কয়েকজন সদস্যও এই বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেছেন।

এই বৈঠক ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনওয়ার গারগাশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি চিঠি নিয়ে এসেছেন বলে নিশ্চিত করেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। এই চিঠিটি পরমানু ইস্যুতে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে পাঠিয়েছেন।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি খামেনিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যেখানে নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে। জবাবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, তারা আলোচনা করতে আগ্রহী নন, কারণ পুনরায় ট্রাম্প চাপ প্রয়োগ করেছেন। এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মঙ্গলবার ট্রাম্পকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কোন আলোচনা করবেন না। অতএব, ট্রাম্প যা ইচ্ছা করুক।

বাংলাভিশনের গুগল নিউজ ফলো করতে ক্লিক করুন
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরান ও রাশিয়ার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তারা একটি কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। উভয় দেশেরই চীনের সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এদিকে, চীনও জানিয়েছে, পারমাণবিক আলোচনা দ্রুত পুনরায় শুরু করতে ইরানকে সমর্থন জানায় তারা।

ইরান ২০১৫ সালে ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল, যার ফলে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল ও পারমাণবিক কর্মসূচিতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। তবে, ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে, এরপর ইরানও তার পারমাণবিক প্রতিশ্রুতি থেকে ধাপে ধাপে সরে আসতে শুরু করে।