গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনের ‘কার্যকর’ প্রতিবাদ হিসেবে দেশটির উপর বিভিন্ন ধরনের ‘অবরোধ’ আরোপ করতে ন্যামভুক্ত (জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন) দেশসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার ইরানের রাজধানী তেহরানে আন্তর্জাতিক সংগঠনটির ফিলিস্তিন বিষয়ক এক জরুরী বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
সমালোচনা, আনুষ্ঠানিক বক্তৃতা-বিবৃতি ও প্রস্তাব গ্রহণের গতানুগতিক ধারার বাইরে বেরোনোর সময় হয়েছে মন্তব্য করে জনাব রিজভী ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ন্যামের দ্ব্যর্থহীন অবস্থান ও সম্মিলিতি শক্তিতে প্রতিবাদ প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, “ইসরায়েল যেভাবে দমনের জন্য বলপ্রয়োগ করছে একইভাবে ন্যাম সদস্য দেশগুলোরও তাদের প্রত্যাখ্যান করা উচিত, যাতে তারা সভ্য আচরণ করে।”
উপদেষ্টা আরও বলেন, “দেশটির ওপর বাণিজ্য অবরোধ আরোপ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জড়িত ইসরায়েলি রাজনীতিক, কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের ভিসা না দিয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী বার্তা পাঠানো উচিত।” এছাড়া অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তি লংঘনের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র কেনাবেচা বন্ধ ও নিজেদের আকাশসীমায় ইসরায়েলি উড়োজাহাজ চলাচলের অনুমতি স্থগিত করার জন্যও ন্যামের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে সংহতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সভাপতিত্বে বৈঠকে সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রী ও বিশেষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বৈঠক শেষে গাজা উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সম্মিলিত ও দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন পদক্ষেপ’ নিশ্চিত করতে ন্যামের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি ঘোষণা দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করে অবিলম্বে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বন্ধের দাবী জানিয়েছে। অধিকতর প্রাণহানি এড়াতে সর্বোচ্চ সহনশীলতা প্রদর্শনসহ পুনরায় শান্তি প্রক্রিয়া সচল করতে সংলাপ শুরুর জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েও বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করার ঘোষণা দিয়ে গত ৮ জুলাই সেখানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় এক মাসের এ অভিযানে এরইমধ্যে দেড় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। এ সময়ে তিন সহস্রাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে ১৮ লাখের মতো মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গাজা ছেড়েছেন।