
সকাল থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) কাজ হচ্ছে না। চলছে শাটডাউন কর্মসূচি। ফলে ভবনের ভেতরে কেউ ঢুকতেও পারছেন না, বের হতেও পারছেন না। এর ফলে রাজধানীসহ সারা দেশে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর অফিসে সব ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল, ঢাকা কাস্টমস হাউসসহ দেশের সব কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশনে কার্যক্রম বন্ধ। এতে আমদানি–রপ্তানিতে সব ধরনের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ আছে। কেবলমাত্র আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা চালু রাখা হয়েছে।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত রাজস্ব ভবনে জড়ো হতে শুরু করেন এনবিআর কর্মকর্তা ও কর্মচারী। সকাল ১১টা পর্যন্ত রাজস্ব ভবনের সামনের সড়কে ছিল কর্মকর্তাদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য এবং সাঁজোয়া যানও রাখা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কোনো কাজ হচ্ছে না। কর্মকর্তাদের সব টেবিল চেয়ার ফাঁকা পড়ে আছে। এনবিআরের তিনটি ফটকে তালা ঝুলছে। সামনের রাস্তায় কয়েক শ কর্মকর্তা-কর্মচারী অবস্থান করছেন।
দেশের বাণিজ্য নগরী চট্টগ্রাম প্রধান কাস্টমস স্টেশন। শাটডাউনের প্রভাবে সেখানেও আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও কেউ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কর্মবিরতির সময় কিছু কাজ চললেও আজ থেকে কমপ্লিট শাটডাউন হওয়ায় সব কার্যক্রম বন্ধ। কর্মকর্তারা কেউই কাজে অংশ নিচ্ছেন না।
চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টম অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি রেজাউল করিম স্বপন বলেন, আমরা আগেই সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের বিষয়টি জানিয়েছিলাম। ফলে তারাও কাস্টম হাউসে আসেননি। কার্যত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে।
আজ সকাল ছয়টা থেকে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়নও বন্ধ হয়ে গেছে। তবে আগে নিবন্ধন হওয়া জাহাজ থেকে বন্দরে কনটেইনার ওঠানো-নামানো কার্যক্রম চালু রয়েছে। নিবন্ধনহীন নতুন জাহাজ জেটিতে আসলে শাটডাউন কর্মসূচির আওতায় পড়বে। তখন বন্দরের কার্যক্রমেও প্রভাব পড়বে ব্যাপক হারে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানির শুল্কায়ন থেকে খালাস পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সব কার্যক্রম কাস্টমসের অনুমোদনে হয়। কাস্টমসের অনুমোদন ছাড়া এসব কার্যক্রমের কোনোটি হয় না। ফলে কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ হলে বন্দরের কার্যক্রমেও এর প্রভাব পড়ে।’
বন্দরের চিফ পার্সোনাল অফিসার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বন্দর জেটিতে জাহাজ থেকে পণ্য উঠা নামার কাজ এখনো স্বাভাবিক আছে। তবে খালাস প্রক্রিয়ার সেসব পয়েন্টে কাস্টমস যুক্ত আছে, সেখানে কিছুটা প্রভাব পড়ছে।’
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, আগের অনুমোদন থাকায় জেটিতে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠা-নামার কাজ চলছে। তবে যেসব জাহাজ এখন নিবন্ধন হয়নি, সেগুলোতে কনটেইনার ওঠা-নামা করা যাবে না। রপ্তানি শুল্কায়ন না হলে সেখানেও প্রভাব পড়বে। দ্রুত এই কর্মসূচির ইস্যু নিস্পত্তি করা দরকার সরকারের। অন্যথায় আমদানি-রপ্তানিতে ভয়াবহ সংকট তৈরি করবে।
ঢাকা কাস্টম হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া সব ধরনের কাজ এখন বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনকারী কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা সচল থাকবে, তবে অন্যান্য কার্যক্রমে কেউ অংশ নেবেন না।






































