Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম আনছে চীন

নিরাপত্তা ইস্যুতে নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করছে চীন। আগামী অক্টোবর নাগাদ অপারেটিং সিস্টেমটির উদ্বোধন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে অপারেটিং সিস্টেমটি ডেস্কটপের জন্য চালু করা হবে। পরবর্তী সময়ে তা স্মার্টফোনসহ অন্যান্য মোবাইল ডিভাইসের ব্যবহারযোগ্য করে বাজারে ছাড়া হবে। সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া তাদের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। খবর রয়টার্স।

Chine চীনসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর অপারেটিং সিস্টেমের ওপরই অধিক নির্ভরশীল। কিন্তু চীন এখন   অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারে নিজস্ব নীতি গ্রহণের পরিকল্পনা করছে। মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ, অ্যাপলের আইওএস ও গুগলের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমগুলো এখন বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত। এগুলোর ব্যবহার নিজের দেশে কমিয়ে আনতেই চীন নতুন অপারেটিং সিস্টেম তৈরির  কাজ শুরু করেছে।

chardike-ad

কম্পিউটার প্রযুক্তি এখন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মূল বিবাদের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশ দুটি নিয়মিতই একে অন্যের বিরুদ্ধে সাইবার হামলার অভিযোগ করছে। চীন নিজেদের ওপর সাইবার হামলা রোধ করতে এরই মধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। দেশটিতে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে চীনা গ্রাহকদের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে বলে দাবি চীনের। এ ধরনের দাবির ভিত্তিতেই দেশটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

চীন উইন্ডোজ, আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েডের মতো আমদানিকৃত অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে স্থানীয় অপারেটিং সিস্টেমেই অধিক নির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করছে। ডেস্কটপসহ চীনে ব্যবহৃত  সব ধরনের মোবাইল ডিভাইসে চীন তাদের নতুন অপারেটিং সিস্টেমটি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। অপারেটিং সিস্টেম তৈরিতে নিয়োজিত গবেষক দলের প্রধান নি গুয়াংন্যান বলেন, প্রাথমিকভাবে অপারেটিং সিস্টেমটি ডেস্কটপে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে মোবাইল ডিভাইসগুলোয়ও এ অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবহার শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশটির বাণিজ্য  ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দাফতরিক সংবাদপত্র পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস নিউজে নি এ মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ থেকে অপারেটিং সিস্টেম তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে নি আরো বলেন, ‘অক্টোবর মাসের মধ্যে ডেস্কটপভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে পারে। অপারেটিং সিস্টেমটির সঙ্গে অ্যাপ স্টোরও যুক্ত থাকবে।’ অবশ্য চীনের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। এ অপারেটিং সিস্টেমগুলোর মান খুব একটা ভালো না হওয়ায় এগুলো গুগলের অ্যান্ড্রয়েড, মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ বা অ্যাপলের আইওএসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারছে না। কিন্তু নতুন অপারেটিং সিস্টেমটির মান অনেক উন্নত হবে। এটি নিঃসন্দেহে চীনের বাজারে মার্কিন অপারেটিং সিস্টেমগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন নি গুয়াংন্যান।

বিবৃতিতে নি বলেন, ‘আশা করছি আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে স্থানীয় ডেস্কটপভিত্তিক সফটওয়্যারগুলো বিদেশী অপারেটিং সিস্টেমগুলোর জায়গা সম্পূর্ণরূপে দখলে সক্ষম হবে। আর তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে চীনে ব্যবহূত মোবাইল ডিভাইসগুলোয় দেশটির নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেমটি সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব স্থাপনে সক্ষম হবে।’

গত মে মাসে চীন সরকারি কাজে উইন্ডোজ এইটের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, নিজ দেশে চীন স্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রভাব বাড়াতে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করছে। চীন অবশ্য এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গত মার্চে চীনা কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশটির মোবাইল ডিভাইসের বাজারে অ্যান্ড্রয়েডের মাধ্যমে মার্কিন প্রতিষ্ঠান গুগলের প্রভাব বাড়ছে। এতে স্থানীয় মোবাইল ডিভাইস নির্মাতারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই উন্নত অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করছে চীন।