
নভেম্বরের মাঝেই গণভোট আয়োজন ও দ্রুত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দলটি প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়েছে বলে জানিয়েছে জামায়াতের দায়িত্বশীল একটি সূত্র। তবে উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে তাদের এখনো সময় দেওয়া হয়নি।
সূত্র জানায়, গণভোট ও সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির বিষয়ে কথা বলতে তারা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে নভেম্বর মাসের মধ্যে গণভোট চেয়ে আসছে জামায়াত। তারা মনে করে, সে জন্য অতি দ্রুত সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা জরুরি। কিন্তু সরকার আদেশ জারিতে সময় ক্ষেপণ করছে, যা নভেম্বরে গণভোট অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা অনিশ্চিত করে তুলছে। এ পরিস্থিতিতে দলটির নেতারা বোঝার চেষ্টা করছেন, গণভোট ঘিরে সরকার কী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
তবে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, তাঁরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। সরকার আদেশ জারিতে আরও সময় নিলে জামায়াত শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, লন্ডন বৈঠকের পর থেকে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার প্রভাবে সরকারপ্রধান বিএনপির প্রতি ঝুঁকেছেন। তাদের মতে, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনসহ সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো বিএনপির দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। গণভোটের ক্ষেত্রেও সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপির অবস্থানকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে তারা মনে করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের এক নেতা বলেন, ‘সরকার এখন একটি দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়, এতে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা হারাচ্ছে।’
গণভোটের সময় ও ধরন নিয়েও বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে। বিএনপি বলছে, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে—দুটি ব্যালটে। অন্যদিকে জামায়াতের দাবি, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির পর আলাদা সময়ে গণভোট আয়োজন করতে হবে, তারপর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন।
গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘একটি মহল নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র করছে।’
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘একই দিনে নির্বাচন ও গণভোটের আয়োজন সংস্কার বাস্তবায়নকে গুরুত্বহীন করে দেবে, এতে কার্যত সংস্কার প্রক্রিয়া ভণ্ডুল হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নজরে রাখছি। সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করছি। জামায়াত রাষ্ট্রসংস্কারে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন চায়। এ পথে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে আমরা মাঠে থাকব।’



































