Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ আজ

brasil argentinaকোন রাখঢাক রাখেননি জেরার্ডো মার্টিনো। বেইজিংয়ে নামার পর আর্জেন্টিনা কোচের উক্তি, ‘জাতীয় দলের মধ্যে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথই সবচেয়ে উত্তেজনাকর। লড়াইটা যেখানেই অনুষ্ঠিত হোক না কেন, তা সবসময়ই দুই দেশের ইতিহাস এবং খেলোয়াড়দের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ ইতিহাস বলছে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল ২০ সেপ্টেম্বর, ১৯১৪। এর পর দুই লাতিন প্রতিবেশী আরো ৯৪ বার মুখোমুখি হওয়ার পথে পেরিয়ে গেছে ১০০ বছর। দ্বৈরথের এ শতবর্ষ পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে শনিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় বেইজিংয়ের ‘বার্ডস নেস্ট’ স্টেডিয়ামে আবারো মুখোমুখি হচ্ছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা।

এ দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে বিশ্বকাপের ফাইনালে দেখতে চেয়েছিল ফুটবলামোদীরা। কিন্তু জার্মানির বাগড়ায় তা ঘটেনি। সেমিতে ব্রাজিলকে ৭-১ গোলে বধ করার পর ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে কাঁদিয়ে তারাই জিতে নেয় বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট। এর পর ব্রাজিল ও আর্জেন্টাইন ফুটবলে অনেক জল গড়িয়েছে। দুই দেশেরই কোচ বদল হয়েছে। আর্জেন্টিনায় সাবেলায় জায়গায় মার্টিনো। ব্রাজিলে স্কলারির চেয়ারে দুঙ্গা। প্রায় দুই বছর আগে সর্বশেষবারের মুখোমুখিতে ২-১ গোলের জয় পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের পর প্রীতি ম্যাচে জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে শুভসূচনা করা মার্টিনো জানালেন, তাদের কৌশল বদলের কোনো সম্ভাবনা নেই। ‘জার্মানির বিপক্ষে খেলাটা ধরে রাখার চেষ্টা করব। ব্রাজিলে কোচ বদল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাদের দলটা আগের মতোই ভীষণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’— বলেন মার্টিনো।

chardike-ad

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথের বেশ গালভরা একটা নাম আছে— ‘সুপার ক্লাসিকো ডি লাস আমেরিকাস’, যার প্রচলন ঘটে ২০১১ সালে। বছরপ্রতি দুই লেগের এ লড়াইটি এবারই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে লাতিন আমেরিকার বাইরে। দুই বছর পর আবারো মাঠে গড়ানো ‘সুপার ক্লাসিকো’র উত্পত্তি ঘটেছে মূলত ‘রোকো কাপ’ (১৯১৪-১৯৭৬) থেকে। দ্বৈরথটির প্রচলন ঘটিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল হুলিও আর্জেন্টিনো রোকো। ফুটবল দিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশকে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্রাজিল থেকে জাহাজ দেরিতে ছাড়ায় টুর্নামেন্টটির প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়ের এক সপ্তাহ পরে। তার বদলে বুয়েন্স আয়ারসে একটি প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই প্রতিবেশী। ম্যাচটা ৩-০ গোলে জিতে নেয় স্বাগতিকরা। ফিফা স্বীকৃত এটাই ছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার প্রথম মুখোমুখি দ্বৈরথ। তবে এক সপ্তাহ পর আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে রোকো কাপের প্রথম শিরোপাটা ব্রাজিলই জিতে নেয়। এর পর থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বেশকিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়ে এসেছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফুটবল। কে সেরা? অ্যাঞ্জেল লাবারুনা নাকি জিজিনহো? কার্লোস পেউচেল্লে নাকি লিওনিদাস? ডি স্টেফানো নাকি গারিঞ্চা? হাল আমলে অবশ্যই পেলে নাকি ম্যারাডোনা?

বেইজিংয়ের ‘পাখির বাসা’য় এদের কাউকেই দেখা যাবে না। সেখানে বার্সেলোনার দহরম মহরম ভুলে মুখোমুখি হবেন মেসি-নেইমার। কাকাও থাকবেন। প্রায় ১৮ মাস পর ব্রাজিলের জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন বর্ষীয়ান এ মিডফিল্ডার। খেলবেন কিনা তা নিশ্চিত না হলেও ৩২ বছর বয়সী তারকাটি বেশ আত্মবিশ্বাসী, ‘আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিজের জায়গা ফিরে পেতে চাই। দলের সবার প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে।’

অনেক জল্পনা-কল্পনা চললেও ম্যাচটা মাঠে গড়ানোয় বাদ সাধতে পারে চীনের বৈরী আবহাওয়া। কারণ গোটা বেইজিংকে গ্রাস করেছে কুয়াশা। এরই মধ্যে শহরটিতে জারি করা হয়েছে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’, যা সতর্কতার মাপকাঠিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ের আবহাওয়া ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১৮ গুণ খারাপ! কোনো দলের খেলোয়াড়রাই হোটেল থেকে বের হতে পারেননি। ভেনু নিয়ে তাই এরই মধ্যে সমালোচনা সইতে হচ্ছে ‘সুপার ক্লাসিকো’র আয়োজকদের। কিন্তু মার্টিনোর কথায় তাদের ভরসা থাকলে ৯১ হাজার আসনবিশিষ্ট পাখির বাসায় একটি সিটও ফাঁকা থাকার কথা নয়। গোল ডটকম।